শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
পিএনএসবি'র তথ্য

কিডনি রোগে প্রতি ঘণ্টায় মারা যায় ৫ জন শিশু

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৫ মার্চ ২০১৯, ০০:০০
বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত অতিথিরা -যাযাদি

বিশ্বে কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৫ শিশুর মৃতু্য হয়। প্রতি ১০ শিশুর মধ্যে ১ শিশু কিডনি রোগে আক্রান্ত। এমন তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশে কিডনি রোগ নিয়ে গবেষণাকারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ১৪তম বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে পেডিয়েট্রিক নেফ্রোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশ (পিএনএসবি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও গবেষকেরা জানান, বাংলাদেশে প্রায় ২ কোটি লোক বিভিন্ন ধরনের কিডনি জটিলতায় ভুগছেন। এর মধ্যে ৪০/৫০ লাখ রোগী শিশু। কিডনি রোগের প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। বিশ্বে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৫ শিশু কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে এবং প্রতি ১০ শিশুর মধ্যে এক শিশু কিডনি রোগে আক্রান্ত।

প্রায় ৭৫ থেকে ৮৫ শতাংশ মানুষ কিডিনির রোগ সম্পর্কে অবগত থাকেন না। রোগে আক্রান্ত হয়ে কিডনি বিকল হওয়ার পর তারা রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানতে পারেন বলে জানান গবেষকরা।

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদন তুলে ধরেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং পিএনএসবির প্রেসিডেন্ট গোলাম মাঈন উদ্দিন। তিনি বলেন, ২০১৮ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় ৫০ হাজার শিশুর ক্রনিক কিডনি ডিজিজ আছে, যাদের শতকরা ১০ ভাগ কিডনির বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। কিডনি প্রতিস্থাপন করেছে শতকরা শূন্য দশমিক এক ভাগ। বিএসএমএমইউতে কিডনি রোগজনিত সমস্যায় বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে ৬ হাজার ২০৬ জন রোগী এবং অন্তঃবিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে ৫৫৯ জন রোগী। এদের মধ্যে ক্রনিক কিডনি রোগীর সংখ্যা ২২৮ জন। অ্যাকুইট কিডনি রোগীর সংখ্যা ৩৩ জন এবং ১১ জনের কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে বিশেষ করে বিএসএমএমইউতে কিডনি রোগের বিশ্বমানের চিকিৎসা হয় দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকরা জানান, সাধারণত কিডনির কার্যক্ষমতা ৫০ ভাগেরও বেশি নষ্ট হওয়ার পূর্বে কিডনি বিকলের লক্ষণ না। যাদের বংশে এসব রোগ আছে, যাদের ওজন বেশি, যারা অস্বাস্থ্যকর খাবার খায়, দীর্ঘদিন ব্যথার ওষুধ খাচ্ছে অথবা যাদের কিডনিতে পাথর জমেছে, ঘন ঘন মূত্রতন্ত্রের প্রদাহ হচ্ছে; তারা সবাই কিডনি রোগের ঝুঁকিতে আছে। এসব রোগীদের অন্তত ছয় মাস পর পর রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

তারা আরো জানান, প্রস্রাব পরীক্ষার অ্যালবুমিন ও রক্তের ক্রিয়েটিনিন থেকে ইজিএফআর নির্ণয় করে কিডনি আক্রান্ত হয়েছে কিনা তা জানা যায়। সরকারের কমিউনিটি ক্লিনিকসহ সকল হাসপাতালে এ দুটি পরীক্ষা বিনামূল্যে করানোর সুযোগ থাকলে অঙ্কুরেই কিডনি রোগ শনাক্ত করে তা প্রতিহত করা যাবে।

এছাড়া সম্পূর্ণ বিকল হওয়া কিডনি ডায়ালাইসিস বা প্রতিস্থাপনে যে ব্যয় হয় তা দেশের ৯০ ভাগ লোক বহন করতে পারেন না বলেও চিকিৎসকদের গবেষণায় উঠে এসেছে। এর জন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন ধরনের ভর্তুকি প্রদান এবং সবার জন্য স্বাস্থ্যবিমা চালু করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য মেডিকেলের নেফ্রোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) অধ্যাপক মামুন মুস্তাফি, বিএসএমএমইউ'র নিউনাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ শহীদুলস্নাহ, নার্সিং একাডেমির ডিন মো. হাবিবুর রহমান, পিএনএসবি-এর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন খান, সহযোগী অধ্যাপক ডক্টর আফরোজা বেগম।

প্রতি বছর মার্চ মাসের দ্বিতীয় বৃহস্পতিবার বিশ্ব কিডনি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি অফ নেফ্রলজি। চলতি বছরে 'সবার জন্য সুস্থ কিডনি, সব জায়গায়' এই প্রতিপাদ্য হিসেবে নিয়ে দিবসটি পালন করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<40941 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1