শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খুঁড়িয়ে চলছে শেয়ারবাজার

নতুনধারা
  ০৭ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদ রিপোর্ট

পুঁজিবাজারে গতি ফেরাতে সরকার বেশ তোড়জোড় চালালেও সুফল মিলছে না। অব্যাহত দরপতন আর লেনদেন খরার খপ্পরে পড়ে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে শেয়ারবাজার। এতে প্রতিনিয়ত দরপতনে পুঁজিহারা বিনিয়োগকারীদের হা-হুতাশ বেড়েই চলেছে।

শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে তারল্য ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। যে কারণে বাজারে গতি ফেরাতে সরকার আন্তরিক হলেও সুফল মিলছে না। বিশেষ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থার ওপর বিনিয়োগকারীদের চরম আস্থা সংকট বিরাজ করছে।

এর সঙ্গে সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) নীতি নির্ধারকদের বক্তব্যে এক ধরনের বিরোধের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। যা শেয়ারবাজারের সংকট আরও বাড়াচ্ছে। বিএসইসি ও ডিএসইর মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক না থাকলে বাজারে গতি ফেরানো কষ্টকর- এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, রোববার ডিএসইর সবকটি মূল্য সূচকের পতনের পাশাপাশি কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। সেই সঙ্গে দরপতন হয়েছে সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের। বাজারে লেনদেনে অংশ নেয়া ৯০ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার বিপরীতে দরপতন হয়েছে ২১৩টির। আর ৫১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ২১ পয়েন্ট কমে চার হাজার ৯১৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্‌ দশমিক ২ পয়েন্ট কমে এক হাজার ১৩৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ৭ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৭৪৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। বাজারে দিনভর লেনদেন হয়েছে ৩০৭ কোটি ২২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩২৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকার। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ২১ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

ডিএসইর এক সদস্য বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই বাজারে তারল্য সংকট বিরাজ করছে। এর সঙ্গে বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকটও রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক রেপোর (পুনঃ ক্রয় চুক্তি) মাধ্যমে পুঁজিবাজারে অর্থ সরবরাহের উদ্যোগ নেয়ায় কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব দেখা দেয়। কিন্তু প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) নিয়ে বিএসইসি ও ডিএসইর নীতি নির্ধারকদের মধ্যে এক ধরনের দ্বন্দ্ব কাজ করছে। সম্প্রতি তাদের বক্তব্যের বিষয়টি সবার সামনে এসেছে। এতে বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

শনিবার (৫ অক্টোবর) বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী স্টক এক্সচেঞ্জের সমালোচনা করে বলেন, স্টক এক্সচেঞ্জ খুঁড়ে খুঁড়ে চলছে। কমিশনের মতো সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্টক এক্সচেঞ্জ তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না। স্টক এক্সচেঞ্জের আরও দ্রম্নত চলা দরকার। কিন্তু গত ৫-৬ বছরে স্টক এক্সচেঞ্জে কোনো যোগ্য লোক নিয়োগ দিতে দেখিনি।

বিএসইসির এ কমিশনার বলেন, হতভাগা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ আইপিওর ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য বলে। অথচ তারা ভুলে গেছে, লিফটের মধ্যে আইপিও শেয়ার বিলিবণ্টন এবং সেগুলো নিয়ে কি হয়।

এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান ইমন বলেন, গাছ যেমন ছায়া দেয়, তেমন কোম্পানির শেয়ার বিনিয়োগকারীদের ছায়া দিয়ে রাখার কথা। কিন্তু এটাই সত্য এখন অনেক শেয়ার আসছে, সেই শেয়ারের ছায়া তো দূরের কথা পাতাও পাওয়া যাচ্ছে না।

বিএসইসি ও ডিএসইর নীতি নির্ধারকদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে বিনিয়োগকারী মিজানুর রহমান বলেন, বিএসইসি ও ডিএসইর কর্মকর্তারা যে যার ধান্দায় রয়েছে। সবাই নিজের স্বার্থ হাসিলের পাঁয়তারা করছে। বিনিয়োগকারীদের কথা কেউ চিন্তা করছে না। বিএসইসি তো একের পর এক দুর্বল কোম্পানি দিয়ে বাজার ভরিয়ে ফেলেছে। সবাই এ নিয়ে সমালোচনা করছে, কিন্তু বিএসইসির কেউ এতে কর্ণপাত করছে না। উল্টো বিনিয়োগকারীদের সচেতন করার লক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কে কার পেছনে কতটুকু লাগতে পারে সেই প্রতিযোগিতা করে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<69946 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1