শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে কাল জনতার রায়

হেলাল উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম
  ২৬ জানুয়ারি ২০২১, ২১:৪৬
আপডেট  : ২৬ জানুয়ারি ২০২১, ২২:১৩
রেজাউল করিম চৌধুরী ডা. শাহাদাত হোসেন

বুধবার বহুল আলোচিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এ নির্বাচনে প্রধান দুই মেয়রপ্রার্থী আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরী এবং বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেনসহ লড়ছেন ৭ প্রার্থী। এছাড়া ৪১ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন আরও ২২৫ জন প্রার্থী। চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশনে এটি নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীকের প্রথম লড়াই। দুটি প্রধান দলের এই লড়াইয়ের পরিসমাপ্তি কী হয় তা দেখার অধীর আগ্রহে দেশবাসী।

এই নির্বাচন শুধু একজন মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচনের লড়াই নয়, একই সঙ্গে গণতন্ত্রের বড় হাতিয়ার ‘ভোটাধিকার’ প্রয়োগে আস্থা ফেরানোর বড় ‘পরীক্ষা’ হিসেবে দেখছেন সাধারণ মানুষ। তবে ভোটের দিন সাধারণ ছুটি না থাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। বাস্তবতা ও নানা সমীকরণে এবারের সিটি নির্বাচন শেষ পর্যন্ত চলমান রাজনীতির ‘টার্নিং পয়েন্ট’ উঠতে পারে।

সবকিছু ছাপিয়ে এবারের নির্বাচনের মূল আলোচনার বিষয় ইভিএম। এর আগে একাধিক নির্বাচনে আংশিকভাবে ইভিএম ব্যবহার হলেও এবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন পুরোটাই হবে ইভিএমে। নির্বাচন কমিশন বলছে, ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের আট হাজার সদস্য মাঠে থাকবে। মঙ্গলবার পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

২১ দিনের উৎসব মুখর প্রচার-প্রচারণা শেষে আজকের নির্বাচনে ৭৩৫টি কেন্দ্রে ভোট দেবেন প্রায় সাড়ে ১৯ লাখ ভোটার। নির্বাচনে প্রধান দুই মেয়রপ্রার্থী আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী ও বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন নিজেদের জয়ের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। এছাড়া ২২৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর সবাই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। এর মাঝে দুই দলে ৩২ জন বিদ্রোহী প্রার্থীও রয়েছেন।

একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় নগরীর ৩১ নম্বর আলকরণ ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে আজ ভোটগ্রহণ হবে না। তবে ওই ওয়ার্ডে মেয়র ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ভোট নেওয়া হবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ভোটগ্রহণকে ভোটোৎসবে পরিণত করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। তবে অর্ধেকের বেশি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নিয়ে কিছুটা শঙ্কাও প্রকাশ করেছেন নগরবাসী। এ ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের আশঙ্কা নাকচ করে দিয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে আজ সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে বলে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ হবে। প্রতিটি কেন্দ্রেই ইভিএমে ভোটগ্রহণ চলবে। ৭৩৫টি ভোট কেন্দ্রে ৪ হাজার ৮৮৬টি বুথে ভোটগ্রহণ করা হবে। এর মধ্যে অস্থায়ী ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ২টি, অস্থায়ী বুথের সংখ্যা ৭৬৪টি। ৭৩৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৪১৭টি বা ৫৬ দশমিক ৭৩ শতাংশ কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে প্রশাসন। ভোটগ্রহণের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৭৩৫ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ৪ হাজার ৮৮৬ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং ৯ হাজার ৭৭২ জন পোলিং কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে দলীয় মনোনয়ন পর্যন্ত সবই সম্পন্ন হয়েছিল। নির্বাচনের মাত্র দিন কয়েক আগে করোনা পরিস্থিতিতে স্থগিত করা হয় নির্বাচন। পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হওয়ার পর নতুন করে ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করা হয় এ বছরের ২৭ জানুয়ারি। নতুন তারিখ ঘোষণার পর গত ৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। এর মধ্যে হামলা পাল্টা হামলা হয়েছে। অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগও কম নয়। এসবের মধ্যেও জমজমাট নির্বাচনী প্রচারণা দেখা গেছে। প্রার্থী ও সমর্থকদের গণসংযোগ ও স্লোগানে মুখর ছিল নগরী।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে