রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১
যুদ্ধে যাওয়ার ভীতি

ইউক্রেন থেকে পালাচ্ছেন পুরুষরা

পালিয়ে যাওয়ার অনেক ঘটনাই বেশ নাটকীয়। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি দনিয়েস্তার নদী সাঁতরে পার হয়ে মলদোভার দিকে যাচ্ছেন। মলদোভার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা তাকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে। আরেকটি ভিডিওতে বেশ করুণ পরিণতি দেখা যায়। এতে দেখা যায়, ইউক্রেন ও রোমানিয়ার সীমান্তে তিসা নদী সাঁতরে পার হওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে ডুবে মারা যাওয়া কয়েক জনের মরদেহ টেনে তীরে তোলা হচ্ছে...
যাযাদি ডেস্ক
  ২০ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
ইউক্রেনের তিসা নদী সাঁতরে পালাতে গিয়ে অনেকে ডুবে মারা গেছেন

যুদ্ধে সামরিক বাহিনীতে নিয়োগ পাওয়া এড়াতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে প্রায় ২০ হাজার পুরুষ দেশটি থেকে পালিয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকে দেশ ছাড়তে গিয়ে বিপজ্জনক নদী সাঁতরে পার হয়েছে। অনেকে আবার রাতের আঁধারে হেঁটেই সীমান্ত অতিক্রম করেছেন। কিয়েভ জানিয়েছে, আরও ২১ হাজার ১১৩ জন পালানোর চেষ্টা করার সময় ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়েছেন।

রাশিয়ার আক্রমণের পর ১৮-৬০ বছর বয়সি পুরুষদের দেশ ছাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কিন্তু জানা যাচ্ছে, প্রতিদিন কয়েক ডজন করে পুরুষ ইউক্রেন ছাড়ছেন। বিদেশে পরিবারের সঙ্গে মিলিত হতে, পড়াশোনা করতে কিংবা কাজের খোঁজে ইউক্রেন ছেড়েছেন এমন বেশ কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।

ইয়েভগেনি নামে একজন বলেন, 'আমি আসলে কী করতাম (ইউক্রেনে)? সবাই যোদ্ধা নয়... পুরো দেশকে আটকে রাখার কিছু নেই। আপনি সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো সবাইকে একসঙ্গে হাতের মুঠোয় দলা পাকিয়ে রাখতে পারেন না।'

ইউক্রেনের প্রতিবেশী রাষ্ট্র রোমানিয়া, মলদোভা, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি ও সেস্নাভাকিয়ার কাছ থেকে সীমান্ত পারাপারের তথ্য সংগ্রহ করে জানা গেছে, ২০২২ সালের ফেব্রম্নয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১৯ হাজার ৭৪০ জন পুরুষ অবৈধভাবে এসব দেশে প্রবেশ করেছেন। ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ বলছেন, এদের মধ্যে বেশিরভাগ পুরুষ, অর্থাৎ প্রায় ১৪ হাজার ৩১৩ জন সাঁতরে কিংবা হেঁটে সীমান্ত পার করার চেষ্টা করেছে। বাকি ছয় হাজার ৮০০ জন অসুস্থতার বাহানায় ভুয়া নথি তৈরি করে সীমান্ত পারের চেষ্টা করেছেন।

সামরিক বাহিনীতে যাদের বাধ্যতামূলক নিয়োগ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন যাদের স্বাস্থ্যগত সমস্যা রয়েছে, দেখাশোনা করার মতো দায়িত্ব রয়েছে এবং তিন বা তার থেকে বেশি সন্তানের পিতা যারা।

গত আগস্টে ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দেশটির সামরিক বাহিনীর মেডিকেল কমিশনের 'দুর্নীতির সিদ্ধান্তের' সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ২০২২ সালের ফেব্রম্নয়ারি থেকে এ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তের কারণে, চিকিৎসা জনিত কারণ দেখিয়ে সামরিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির সংখ্যা ১০ গুণ বেড়েছে। তিনি সামরিক বাহিনীতে নিয়োগদানের দায়িত্বে থাকা সব আঞ্চলিক কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। একই সঙ্গে অন্তত ৩০ জনের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। সামরিক কর্মকর্তারা, ঘুষ নিয়ে মানুষদের সামরিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

প্রেসিডেন্টের পার্লামেন্টারি প্রতিনিধি ফেডির ভেনিসস্নাভস্কি বলেন, 'এই সমস্যা বেশ গুরুতর। সরকার বুঝতে পেরেছে, এই চর্চা বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয় এবং এটি বেশ বিস্তৃত। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, আমাকে জোর দিয়েই বলতে হচ্ছে যে, দুর্নীতি ঘটে চলেছে।' তিনি আরও যোগ করেন, ইউক্রেন 'দুর্নীতির সংখ্যা সর্বনিম্ন পর্যায়ে রাখতে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সব কিছুই করছে। ভেনিসস্নাভস্কি বলেন, পালিয়ে যাওয়া পুরুষদের সংখ্যা কিংবা পালানোর চেষ্টা করা পুরুষদের সংখ্যা যুদ্ধের কার্যক্রমের ওপর কোনো ধরনের প্রভাব ফেলছে না। তিনি বলেন, 'আমি বিশ্বাস করি, ইউক্রেনীয়দের স্বনির্ভরতা, সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা রক্ষার বিষয়ে তাদের আগ্রহ ও প্রস্তুতি ৯৫-৯৯ শতাংশ রয়েছে। যারা চলে যেতে চান, তাদের সংখ্যা এক থেকে পাঁচ শতাংশ। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষার জন্য তারা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ নয়।' তিনি বলেন, যুদ্ধে যোগ দেওয়া মানুষের সংখ্যা সহসাই বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।

৪০ হাজার পুরুষ যারা পালিয়ে গেছেন বা পালানোর চেষ্টা করেছে, তারা মিলিতভাবে অবশ্যই একটি বড় সংখ্যা, যাদেরকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য প্রয়োজন। গত আগস্টে মার্কিন কর্মকর্তারা ধারণা দেন, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর আনুমানিক ৭০ হাজার সদস্য যুদ্ধে নিহত হয়েছে। যদিও হতাহতের কোনো সংখ্যা কিয়েভ দেয়নি। এছাড়া দেশটির সামরিক বাহিনীর আকার সম্পর্কেও আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য দেয়নি ইউক্রেন। কিন্তু দেশটির নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভ ইয়ালটা ইউরোপিয়ান স্ট্র্যাটেজিক ফোরামে গত সেপ্টেম্বরে বলেন, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীতে কমপক্ষে আট লাখের মতো সেনা আছে।

পালিয়ে যাওয়ার অনেক ঘটনাই বেশ নাটকীয়। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একজন ব্যক্তি দনিয়েস্তার নদী সাঁতরে পার হয়ে মলদোভার দিকে যাচ্ছেন। মলদোভার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা তাকে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছে। আরেকটি ভিডিওতে বেশ করুণ পরিণতি দেখা যায়। এতে দেখা যায়, ইউক্রেন ও রোমানিয়ার সীমান্তে তিসা নদী সাঁতরে পার হওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে ডুবে মারা যাওয়া কয়েক জনের মরদেহ টেনে তীরে তোলা হচ্ছে।

কিন্তু মলদোভার অভিবাসন কেন্দ্রে ইয়েভগেনি নামে নির্মাণ শ্রমিক বলেন, তিনি হেঁটে দেশটির সীমান্ত পার করেছেন। সংখ্যার হিসাব করলে দেখা যায়, ইউক্রেন ছাড়ার জন্য এই পথটি বেশ জনপ্রিয়। এরপর থেকে যুদ্ধ বিধ্বস্তদের জন্য আশ্রয় চাওয়া তুলনামূলক সহজ। ইয়েভগেনি বলেন, তিনি ইউক্রেনে আটকা পড়েছিলেন। তরুণ ও যাদের সামরিক অভিজ্ঞতা আছে, তাদের সামরিক বাহিনীতে নিয়োগের জন্য আগে ডাকা হয়েছিল। যার কারণে তাকে এই মধ্যবর্তী সময়ে একটি ভালো চাকরি খুঁজে পাওয়াটা কঠিন হয়ে পড়েছিল। কারণ সব কিছুই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছিল এবং এর মধ্যে বিদু্যৎ, জ্বালানি- সবকিছুর দাম আরও বেশি বাড়ছিল।

মলদোভার পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তিনি আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেন। দেশটিতে প্রবেশের পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই আবেদন করতে হয়, যাতে তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অপরাধের অভিযোগ তোলা না যায়। এই একই আশ্রয় ও অভিবাসন কেন্দ্রে আছেন ২৬ বছর বয়সি এরিক। তিনি খারকিভের একজন গায়ক। তিনি মলদোভা উপত্যকার ট্রান্সনিস্ত্রিয়া এলাকায় দিয়ে হেঁটে এবং পরে একটি নদী সাঁতরে পার হয়ে এসেছেন। সামরিক দায়িত্ব থেকে বাদ পড়ার বিষয়ে ভুয়া নথিপত্র হয়তো বানানো যেত, কিন্তু এরিক তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, আসল নথিপত্র পাওয়াটা বেশ কঠিন।

অ্যাপেনডিক্স ফেটে যাওয়ার কারণে উদ্ভূত রোগ পেরিটোনাইটিসের কারণে তরুণ বয়সে জটিল অস্ত্রোপচার করতে হয়েছিল এরিককে। তিনি বলেন, তাকে একটি বিশেষ খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করতে হয়, যার কারণে তিনি সামরিক বাহিনীতে কাজ করতে পারবেন না। কিন্তু তিনি বলেন, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর, সামরিক বাহিনী থেকে অব্যাহতির একটি চিকিৎসা বিষয়ক সার্টিফিকেট পাওয়াটা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল। তিনি বলেন, 'তারা এই দায়িত্ব এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগে পাঠায়: এখানে যাও, সেখানে যাও। আমি ছয় মাস ধরে একটি সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য চেষ্টা করেছি এটা প্রমাণ করতে যে, আমি সামরিক বাহিনীতে কাজ করতে শারীরিকভাবে যোগ্য নই। এর জন্য আমার হাতে প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষার নথি ছিল। এক পর্যায়ে গিয়ে আমি ধৈর্যহারা হয়ে পড়ি।' এরিক পরে আমেরিকায় পৌঁছাতে পেরেছেন। সেখানে তিনি তার স্ত্রী এবং তাদের চার বছর বয়সি মেয়ের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন।

আরেকজন ব্যক্তি যার নাম ভস্নাদ। তার কাছে সামরিক বাহিনী থেকে অব্যাহতির বৈধ নথি রয়েছে। কিন্তু এই নথি সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর সদস্যরা বিশ্বাস করেনি বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, তিনি একটি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি কোর্সে পড়াশোনার সুযোগ পেয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত ছিলেন। তিনি ইউক্রেন ছাড়ার জন্য অনুমোদনও পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি শিগগিরই বুঝতে পারেন যে, সেটা আসলে যথেষ্ট নয়। তিনি বলেন, 'আমি মনে করি, এই সুযোগটা হাত ছাড়া হয়েছে চেকপয়েন্টের কারণে। এরপর আমি আরেকটিতে যাই, তারপর আরেকটিতে যাই। তারা আমার বিষয়টি নিয়ে হাসাহাসি করে আমাকে বাড়িতে ফেরত পাঠিয়ে দেয়। আমি বুঝতে পারি, এই কাগজের টুকরা, এই অনুমোদন একজন সীমান্ত রক্ষী কর্মকর্তার কাছে কোনো মূল্যই নেই। এটিকে কোনো পাত্তাই দেয় না।'

এটির পরিবর্তে ভস্নাদ তিসা নদী সাঁতরে পার হয়ে রোমানিয়ায় প্রবেশ করেন। তিনি তার এক বন্ধুর সহায়তায় ইউক্রেনের সীমান্ত এলাকায় পৌঁছান। কিন্তু ড্যানিলো নামে আরেক ব্যক্তি জানান, তিনি টেলিগ্রামে কারও একজনের সহায়তা নিয়েছিলেন। ওই ব্যক্তি তিসা নদী পার হওয়ার একটি ব্যবস্থার আয়োজন করছিলেন।

পার্লামেন্টারি প্রতিনিধি ভেনিসস্নাভস্কি বলেন, ভুয়া নথি তৈরি কারণে যে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে এবং আসল নথি পাওয়ার ক্ষেত্রে যে জটিলতা রয়েছে যা সীমান্তরক্ষী বাহিনী গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে তা আগামী এক-দুই বছরের মধ্যে ডিজিটাল ব্যবস্থার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।

যাদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে, তারা সবাই ইউক্রেন ছাড়তে সফল হয়েছেন। কিন্তু যারা চেষ্টা করে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষের হাতে ধরা পড়েছেন তাদের ৯২ থেকে ২৩০ ডলার পর্যন্ত জরিমানা গুনতে হয়েছে এবং একই সঙ্গে আট বছর পর্যন্ত কারাদন্ডের মুখে পড়তে হয়েছে। এটা পরিষ্কার নয়, যারা পালাতে সক্ষম হয়েছেন তারা ভবিষ্যতে ইউক্রেনে ফিরে আসতে চাইলে একই ধরনের সাজার মুখে পড়বেন কিনা। কিন্তু ভেনিসস্নাভস্কি বলেন, তিনি মনে করেন না যে, জাতীয় স্বার্থের জন্য এ ধরনের কিছু করা হবে।

ড্যানিলো মনে করেন, 'ইউক্রেনীয়দের তাদের নিজেদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত। কারণ আমি এখনো মনে করি যে, প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার নিজের জীবনের উদ্দেশ্য ঠিক করা উচিত। অনেকের কাছে এর মানে হচ্ছে নিজেদের ভূমিকে রক্ষা করা, আবার অনেকের কাছে নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের রক্ষা করা। অনেকে কিছু গড়তে চান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করতে চান, দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে চান। আমি মনে করি, আর যাই হোক না কেন, আমি যুদ্ধ ক্ষেত্রে যেতে চাই না।' তিনি বলেন, তিনি আশা করেন, যুদ্ধ শেষ হলে, যারা চলে গেছেন, তাদের সাজা না দিয়ে বরং তাদের ফিরে আসতে উদ্বুদ্ধ করবে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ। মানুষ ছাড়া- বিশেষ করে বুদ্ধিমান মানুষ যারা ভালো আয় করে এবং রাজকোষে ভালো পরিমাণ অর্থ জমা করে তাদের ছাড়া যে কোনো রাষ্ট্রের টিকে থাকাটা কঠিন।

যেহেতু এখনো রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনো ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না, তাই এই বিষয়টি কবে প্রাসঙ্গিকতা পাবে, তাও স্পষ্ট নয়। এর আগ পর্যন্ত যুদ্ধ যেহেতু চলছে, তাই ইউক্রেনের যত বেশি সম্ভব সেনা প্রয়োজন। সংবাদসূত্র : বিবিসি নিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে