শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চাল আমদানি

উৎপাদন বাড়াতে হবে
নতুনধারা
  ১৩ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

অনেক দিন থেকেই শোনা যাচ্ছে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু গত তিন বছরের চিত্র ভিন্ন। এর আগে চালের দাম বাড়ার কারণে সরকার চাল আমদানি করতে বাধ্য হয়। এবারও একই ঘটনা ঘটেছে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, বেশ কিছু শর্তে বেসরকারি খাতে চার লাখ ৮৭ হাজার টন চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। সোমবার এক আদেশে ৭২টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এক লাখ ৪১ হাজার টন চাল আমদানির এই অনুমোদন দেওয়া হয়। আগের দিন ৬৪টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এক লাখ ৭১ হাজার ৫০০ টন চাল আমদানির অনুমতি দেয় খাদ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ৬ জানুয়ারি ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৭৪ হাজার ৫০০ টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ৪ লাখ ৮৭ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দেওয়া হলো বেসরকারি খাতে। এই উদ্যোগের ফলে চালের দাম কমলেও, দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এ স্স্নোগান আর টেকসই হলো না।

দেশে পর্যাপ্ত মজুত থাকার পরও চালের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়তে থাকায় বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত মাসে বেসরকারি খাতে আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করে সরকার। বাজার সামাল দিতে সরকার চাল আমদানি করেছে। এর ফলে চালের দাম কমে আসবে। আমরা মনে করি, চাল আমদানি না করে উৎপাদন বাড়ানোর দিকে নজর দিতে হবে।

'মাছে-ভাতে বাঙালি'- কথাটা পুরানো হলেও এর উপযোগিতা বা অনিবার্যতা এখনো হারিয়ে যায়নি। এ দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত-মাছ। মাছ-ভাতনির্ভর বাঙালি যদি চাহিদা মতো এসব কিনতে না পারে কিংবা কিনতে হয় উচ্চমূল্যে- তবে এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কী হতে পারে। বাজারে নাজিরশাইল, মিনিকেট, মোটা চাল সব ধরনের চালের দাম এখনো অনেক বেশি। পাশাপাশি বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। এসব সামাল দিয়ে সমাজের গরিব ও মধ্যবিত্তরা কীভাবে জীবনযাপন করবে সেটাই এখন দেখার বিষয়। বিশেষ করে মোটা চালের দামবৃদ্ধি কোনোভাবেই যুক্তিসঙ্গত নয়। কারণ দেশের স্বল্প আয়ের মানুষ মোটা চালনির্ভর। মনে রাখতে হবে চালের দাম বেড়ে গেলে সব কিছুর দাম বেড়ে যায়। সুতরাং যে করেই হোক চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। তবে তা আমদানির মাধ্যমে নয়।

আসলে পণ্যের সরবরাহ বা সংকটের সঙ্গে দাম বাড়ার কোনো সম্পর্ক নেই। এটা হচ্ছে অসৎ ব্যবসায়ীদের হীন মানসিকতা। অতীতেও আমরা লক্ষ্য করেছি, তারা একেক সময় একেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে ক্রেতাদের পকেট কেটেছে এবং পেঁয়াজের কেজি হয়েছিল ২৫০ টাকা। একইভাবে তারা চিনির দামও বাড়িয়েছিল। আর চালের দাম তো নানা অজুহাতে কয়েক দফা বাড়ল। এটা তাদের ব্যবসায়িক অসুস্থ সংস্কৃতি। এটা হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেয় না। এরা বাজারসন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হবে এটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। ফলে তাদের কাছে দেশের অসহায় জনগণ জিম্মি হয়ে পড়ে। ক্ষেত্র বিশেষ সরকারও তাদের কাছে জিম্মি। বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন চালসহ নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই। বাধ্য হয়ে সরকারকে চাল আমদানি করতে হবে এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে