শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষার্থীরা স্কুল খোলার পক্ষে

সার্বিক সচেতনতা জরুরি
নতুনধারা
  ২১ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

বলা হয়ে থাকে শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষার উন্নয়ন দিয়ে একটি জাতি সব দিক থেকে এগিয়ে যেতে পারে। একটি অন্ধকার ভূখন্ডে থাকা জাতিকে দেখাতে পারে সোনালি সুন্দর স্বপ্ন। সেজন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণে প্রতিষ্ঠা করা হয় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। অথচ করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত ছুটি রয়েছে। এ বন্ধ আর প্রলম্বিত করা সমীচীন নয়। দেশে শিক্ষাসংকট তীব্র হচ্ছে এটা সরকারকে ভেবে দেখতে হবে।

এক সমীক্ষায় প্রকাশ, দেশের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষা কর্মকর্তারা স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী দ্রম্নত ক্লাসে ফিরতে চায়। অর্থাৎ তারা স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে। আর ৭৬ শতাংশ অভিভাবক ও ৭৩ শতাংশ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাও স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে। তবে ৫৮ শতাংশ শিক্ষক ও ৫২ শতাংশ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সতর্কতার সঙ্গে স্কুল খুলে দেওয়ার পক্ষে বলেছেন।

শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থাগুলোর মোর্চা গণসাক্ষরতা অভিযানের 'এডুকেশন ওয়াচ-২০২০-২১ সমীক্ষার অন্তর্র্বর্তীকালীন প্রতিবেদনে' এ তথ্য উঠে এসেছে। এমন প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফেব্রম্নয়ারি থেকে ধাপে ধাপে বিদ্যালয় খুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। প্রথমে করোনার সংক্রমণ নেই বা একেবারে কম থাকা গ্রামীণ এলাকার স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার কথা বলেছে তারা। এরপর মার্চ থেকে বড় বড় শহরের স্কুলগুলো খোলার সুপারিশ করা হয়েছে।

আমরাও মনে করি, আর কতদিন দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে। পরিবেশ, পরিস্থিতি ও সক্ষমতা বিবেচনা করে বিদ্যালয় খুলতে হবে। কবে খোলা হবে, সে বিষয়ে দ্রম্নত ঘোষণা আসা উচিত। প্রথমে গ্রাম এলাকায় এবং পরে মার্চে বড় শহরের স্কুলগুলো খুলতে হবে। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, যাতে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে না পড়ে।

শিশুদের মৃতু্যর মুখে ঠেলে দেওয়া যায় না বলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হলেও শিশুরা আজ আর ঘরে নেই। প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেই বরং এরা নির্দিষ্ট এলাকায় দিনের সিংহভাগ সময় কাটাতে বাধ্য হতো, যেখানে-সেখানে ঘোরাঘুরি করত না, বিশেষ বিশেষ দিবস বা উৎসবের ছুটি ব্যতীত কোথাও বেড়াতেও যেতে পারত না। যেসব মা-বাবার কর্মস্থলে থাকতে হয়, তাদের ছেলেমেয়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। তারা তো আর ঘরে থাকছে না, খেলার মাঠে ঠিকই জটলা করছে, থাকছে না মুখে মাস্ক। প্রথম প্রথম মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেশি পরিলক্ষিত হলেও দিনদিন সবার মধ্যে উদাসীনতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এখন তো অনেকের ঘরে হ্যান্ড-স্যানিটাইজার বা করোনানাশক কিছুই নেই, নেই অতি জরুরি মাস্কও।

আশার কথা, আমাদের দেশে করোনার প্রকোপ অনেকটা কম। সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে আমাদের দেশে করোনা মহামারি আকার ধারণ করতে পারেনি। মাদ্রাসা খুলে দেওয়ার পর যেহেতু শিক্ষার্থীরা এখনো নিরাপদে আছে, স্কুল-কলেজও খুলে দেওয়া হোক। বন্ধ করে নয়, সার্বিক সচেতনতাই পারে দেশ থেকে করোনাকে বিতাড়িত করতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে