শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মেট্রোরেলের অগ্রগতি ৬২ শতাংশ

যথাসময়ে বাস্তবায়ন হোক
নতুনধারা
  ১১ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

রাজধানীতে যদি আধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে না ওঠে, তবে তা সামগ্রিকভাবেই দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমকে ব্যাহত করবে- এমনটি বলা অযৌক্তিক নয়। সঙ্গত কারণেই রাজধানীর যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়নের কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, রাজধানী ঢাকার গণপরিবহণে বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। এ ছাড়া যানজট থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের অনিয়মও আলোচিত। দুর্ভোগ যেন ঢাকা মহানগরীর মানুষের নিত্যসঙ্গী। ফলে ঢাকা মহানগরীর জনগণের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান হবে মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে- এমন বিষয় যখন আলোচনায় এসেছিল তখন তা অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক বিষয়।

সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধির মধ্যেও এগিয়ে চলছে ঢাকাবাসীর স্বপ্নের মেট্রোরেলের কাজ। এই প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি হয়েছে ৬২ শতাংশ। এর প্রথম অংশ উত্তরা তৃতীয় ফেইজ থেকে আগারগাঁওয়ের অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ এবং আগারগাঁও থেকে মতিঝিলের অগ্রগতি ৫৮ শতাংশ। সর্বশেষ মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার বর্ধিত অংশের হাউস হোল্ড সার্ভে এবং সোশ্যাল ও স্টাডি শেষ হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। মূলত বৃহস্পতিবার প্রকল্প বাস্তবায়নকারী রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) মেট্রোরেল-৬ এর সর্বশেষ অগ্রগতি প্রকাশ করে। তারা জানিয়েছে. বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণকাজের সার্বিক গড় অগ্রগতি ৬২ শতাংশ। ফলে আমরা মনে করি, এই বিষয়টি অত্যন্ত ইতিবাচক এবং আশাব্যঞ্জক। স্বপ্নের পদ্মা সেতু ও কর্ণফুলী টানেলের মতো দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় আরেকটি ইতিবাচক বিষয় হলো মেট্রোরেল- যার কাজ ক্রমাগত এগিয়ে চলেছে। ফলে যথাসময়ে কাজ শেষ হোক এমনটি কাম্য।

জানা গেছে, ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার ভায়াডাক্টের মধ্যে ১৩ দশমিক ২৭৫ কিলোমিটার ভায়াডাক্টও দৃশ্যমান হয়েছে। এছাড়া ডিপোর অভ্যন্তরে ১৬ দশমিক ৯০ কিলোমিটার রেললাইন স্থাপন করা হয়েছে। মোট কথা, মেট্রোরেলের কাজ এগিয়ে চলেছে। আরেকটি উলেস্নখযোগ্য দিক হলো, আগামী ডিসেম্বরে উত্তরা-আগারগাঁও অংশটি চালুর আশা করছেন প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা।

প্রসঙ্গত এটাও বলা দরকার ইতিমধ্যে মেট্রোরেলের ভাড়া নির্ধারণ নিয়েও কাজ শুরু হয়েছে। ভাড়া নির্ধারণে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশপাশের দেশে যেভাবে ভাড়া নির্ধারিত হয়েছে, সেভাবে ভাড়া নির্ধারণ হতে হবে বলেও জানা যায়।

আমরা বলতে চাই, এটা মনে রাখা দরকার, রাজধানীতে যানজট চিত্র এতটাই ভয়াবহ, মানুষ গন্তব্যে পৌঁছাবে কখন তা অনুমান করাও কঠিন। যানজটের কারণে রাজধানীবাসীর যে বিপুল কর্মঘণ্টা ও অর্থ অপচয় হয়, তাও নতুন করে বলার প্রয়োজন পড়ে না। সঙ্গত কারণেই এ কথা বলা যায়, মেট্রোরেল চালু হলে অন্যান্য গণপরিবহণে যাত্রীর চাপ কমবে। প্রসঙ্গত বলা দরকার, এর আগে এমনটিও জানা গিয়েছিল, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে উত্তরা থেকে মতিঝিল যেতে সময় লাগবে মাত্র ৩৭ মিনিট, যা বর্তমানে রাজধানীবাসীর কাছে স্বপ্নের মতোই। ফলে এই বিষয়গুলো আমলে নিলে এটাই স্পষ্ট হয়, রাজধানীর যানজট নিরসনে মেট্রোরেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, এখন সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ যেন নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হয় সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, এর আগে বিভিন্ন সময়েই প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে বাস্তবায়ন না হওয়া, ব্যয় বৃদ্ধি, অব্যবস্থাপনাসহ নানা ধরনের বিষয় নিয়েও অভিযোগ এসেছে। সঙ্গত কারণেই এই প্রকল্পটি সুষ্ঠুভাবে এবং নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হোক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে