সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

তীব্র গ্যাস সংকট নিরসনে উদ্যোগ জরুরি

নতুনধারা
  ০১ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

বিভিন্ন সময়েই রাজধানীসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সংকটের বিষয়টি সামনে আসে। অথচ এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, গ্যাস সংকট হলে একদিকে ব্যাহত হয় শিল্প উৎপাদন, অন্যদিকে বাসাবাড়িতে রান্নাবান্নায়ও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে, রমজান মাসের প্রথম দিন থেকেই রাজধানীর অনেক এলাকায় গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে বিকালে ও মধ্যরাতের পর গ্যাসের চুলা চলছে টিমটিম করে। ফলে ইফতার ও সেহরি তৈরিতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকার বাসিন্দাদের। আর তাই বাধ্য হয়ে তাদের বাইরে থেকে অস্বাস্থ্যকর ইফতার বা সেহরির খাবার কিনে খেতে হচ্ছে। এতে পেটের পীড়াসহ নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত রোজদারের সংখ্যা বাড়ছে।

আমরা মনে করি, গ্যাস সংকট সংক্রান্ত সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে। কেননা গ্যাস সংকটের কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ে। এ ছাড়া যদি বাইরে থেকে অস্বাস্থ্যকর ইফতার বা সেহরির খাবার কিনে এনে খাওয়ার অবস্থা হয় তবে বিষয়টি এড়ানোর সুযোগ নেই। স্মর্তব্য যে, ভুক্তভোগীরা বলছেন, গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। অথচ পবিত্র রমজান মাসেও গ্যাসের দেখা নেই। মাঝেমধ্যে গ্যাস এলেও কম চাপের কারণে রান্না করা সম্ভব হয় না। রমজান মাসে রান্নার সময়ে যদি ঠিকমতো গ্যাস সরবরাহ করত, তাহলে মানুষ ইফতার-সেহরি বাসায় তৈরি করে খেতে পারত- এমন মতও সামনে আসছে। ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।

তথ্য মতে, রাজধানীর খিলগাঁও, গোড়ান, বাসাবো, টিকাটুলি, মালিবাগ, আজিমপুর, লালবাগ, ধানমন্ডি, এলিফ্যান্ট রোড, মতিঝিল, সেগুনবাগিচা, মানিকনগর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, শনিরআখড়া, ওয়ারিসহ পুরান ঢাকার বেশ কয়েকটি এলাকায় রমজানের প্রথম দিন থেকেই গ্যাস সংকট তৈরি হয়েছে। যার কারণে চরম ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।

উলেস্নখ্য, গ্যাস সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে তিতাস মেট্রো দক্ষিণের মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) বলেছেন, ডিমান্ড-সাপস্নাইয়ের মধ্যে গ্যাপ (পার্থক্য) থাকার কারণে আগের থেকে সিস্টেমে একটু সমস্যা ছিল। তারপর কিছু গ্যাস অবৈধভাবে ব্যবহার হওয়ার কারণে আগের থেকে প্রেশারও কম ছিল। এ ছাড়া রমজান মাসে ইফতারিসহ অন্যান্য কাজে বেশি গ্যাস ব্যবহার হওয়ার কারণে গ্যাসের চাপ কমতে পারে। যদিও তিনি আশার কথা বলছেন, সামনে গ্যাস আমদানি হবে এবং তখন গ্রাহকরা বেশি মাত্রায় গ্যাস পাবেন। কিন্তু রমজান মাসে গ্যাস সংকট সমাধানের জন্য কি পদক্ষেপ রয়েছে- এমন প্রশ্নে জানিয়েছেন, এ সমস্যা সমাধানে এই মুহূর্তে গ্যাসের ব্যবহার সীমিত করে চালাতে হবে। রমজানের কারণে আপাতত অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযানও বন্ধ রাখা হয়েছে।

আমরা বলতে চাই, সংশ্লিষ্টদের সৃষ্ট পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া দরকার। আমলে নিতে হবে যে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারাদিন সিয়াম-সাধনা শেষে ইফতারের অপেক্ষা করেন রোজাদাররা। কিন্তু গ্যাসের অভাবে রাস্তার পাশের ফুটপাতের দোকান থেকে অস্বাস্থ্যকর ইফতার কিনতে হচ্ছে ঢাকাবাসীকে। এ ছাড়া গ্যাস সংকটে বাধ্য হয়ে অনেকে হোটেলের খাবার খেয়ে রোজা রাখছেন। এখানে তিতাস যে প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিল, তা তারা রাখতে পারেনি। এমন আলোচনাও উঠে আসছে, তিতাস আশ্বস্ত করেছিল, রমজানে গ্যাসের কোনো ক্রাইসিস হবে না। কিন্তু রমজানের প্রথম দিন থেকেই যেহেতু গ্যাসের সংকট চলছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে- তারা যে আশ্বাস দিয়েছিল তা কথার কথা। আমরা মনে করি, সার্বিক অবস্থা আমলে নিয়ে দ্রম্নত গ্যাস সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্টরা উদ্যোগ নেবে।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, গ্যাস সংকটের কারণে অত্যন্ত উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যা এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। এখন যখন রমজান মাসের শুরুতেই এমন তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে তখন বিষয়টি অত্যন্ত উৎকণ্ঠাজনক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে। এ ছাড়া গ্যাসের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষাপটে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে গ্যাস সংকট সৃষ্টি হয়েছে- ফলে সেসবও আমলে নিয়ে সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। যত দ্রম্নত সম্ভব গ্যাস সংকট নিরসন হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে