ঢাকাসহ দেশের কোথাও সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি হচ্ছে না। কারওয়ান বাজারের আলুর আড়তসহ বিভিন্ন বাজারে সরকার নির্ধারিত ৩০ টাকার আলু কিনতে হচ্ছে ৫০ টাকা দরে। এর আগে কখনো আলুর দাম এতটা বাড়তে দেখা যায়নি। পাইকারি ও খুচরা
ব্যবসায়ীদের দাবি, কম দামের আলু এখনো বাজার আসেনি। ক্রেতারা বলছেন, সরকারের সিদ্ধান্তকে তোয়াক্কা না করে সিন্ডিকেট করে আলুর দাম বাড়ানো হচ্ছে।
এ অবস্থায় আজ বৃহস্পতিবার থেকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে আলু বিক্রি না করলে জেল-জরিমানাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে। অসাধু আলু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আজ মাঠে নামছে অধিদপ্তরের একাধিক বিশেষ টিম।
এ দিকে সরকার আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে নির্ধারিত ৩৫ টাকা দরে আলু বিক্রি হচ্ছে কি না মনিটরিং জোরদার করার কথা বলেছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। একই সঙ্গে সরকার নির্ধারিত পেঁয়াজের দর কার্যকর হচ্ছে কি না তাও মনিটরিং করা হবে। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
মুনাফাখোর আলু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারসাজি বাজারে আলুর দাম এখনো হুহু করে বাড়ছে। আলুর চড়া দামে সংকটে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ। জুলাই মাসে যে আলু ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। সেই আলু এখন বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৪৫ থেকে ৫৫ টাকায়। আলুর বাজারের লাগাম টেনে ধরতে সরকার দুই দফায় দাম নির্ধারণ করে দেয়। তার পরও আলুর দাম কমেনি; বরং কোনো কোনো বাজারে আলুর দাম আরও বেড়েছে।
আলুর মূল্যবৃদ্ধির পারদ নিচে নামাতে ৭ অক্টোবর আলুর দাম হিমাগার পর্যায়ে ২৩ টাকা, পাইকারিতে ২৫ টাকা ও খুচরায় ৩০ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার। যদিও এই দাম কোথাও কার্যকর হতে দেখা যায়নি। এরপর সর্বশেষ গত মঙ্গলবার কৃষি বিপণন অধিদপ্তরে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে মতবিনিময় সভা শেষে আলুর দাম খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ টাকা করে সরকার।
এ বিষয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, 'দুই-একদিনের মধ্যেই বাজার মনিটরিং আরও জোরদার করা হবে। ব্যবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত দাম নিয়ে খুশি মনে বাড়ি ফিরেছেন। তারা নিজেরা বলেছেন, এই দাম বাস্তবায়ন না করলে মুনাফাখোর হিসেবে বিবেচিত হবে। তারা আপ্রাণ চেষ্টা করবে আমাদের সহযোগিতা করতে। বৃহস্পতিবার থেকেই বা দুই-একদিনের মধ্যেই আমরা বাজার মনিটরিং আরও জোরদার করব।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, অনেক বছরই আলুর দাম ৩০-৩৫ টাকা হয়। এটা হলে মানুষ তেমন কিছু মনে করবে না। কিন্তু যদি ৫০-৬০ টাকা হয়ে যায় তাহলে কোনোক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়। সরকার নির্ধারিত ৩৫ টাকা যাতে কার্যকর হয় সেজন্য আমরা চেষ্টা করব। এক মাসের মধ্যেই আলুর দাম কমে আসবে।
বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশন (টিসিবি) ২৫ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করছে। এই দামে আলু পাওয়া যাচ্ছে ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় টিসিবির ট্রাকসেল পয়েন্টে। আর সেই আলু কিনতে সকাল থেকেই বিভিন্ন টিসিবির ট্রাক পয়েন্টে ভিড় করেন স্বল্প আয়ের মানুষ।