শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দেশে একদিনে রেকর্ড ১০২ মৃতু্য শনাক্ত ৩ হাজার ৬৯৮ জন

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৯ এপ্রিল ২০২১, ০০:০০

দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১০২ জনের মৃতু্য হয়েছে। গত বছরের ৮ মার্চ করোনা সংক্রমণ শনাক্তের পর এখন পর্যন্ত এটিই একদিনে সর্বোচ্চ মৃতু্যর রেকর্ড। এছাড়া টানা তিন দিন দৈনিক শতাধিক মানুষের মৃতু্য হলো। এর আগে শনি ও শুক্রবার ১০১ জন করে মৃতু্যর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তারও আগে গত ৩১ মার্চ ৫২ জনের মৃতু্যর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর থেকে দৈনিক মৃতু্য কখনোই ৫০-এর নিচে নামেনি। দেশে এ পর্যন্ত মোট মৃতু্যর সংখ্যা বেড়ে ১০ হাজার ৩৮৫ জন হলো।

এদিকে দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত কয়েক দিন ধরে দিনে ৬ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়ে আসছিল। এর মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। সর্বশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ হাজার ৬৯৮ জন নতুন রোগী শনাক্তের তথ্য দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ১৮ হাজার ৯৫০ জনে দাঁড়াল।

প্রতিদিনের মতো রোববার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশসান) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনাভাইরাস বিষয়ক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায় শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত সারাদেশে থেকে ১৮ হাজার ৯২৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে পূর্বের কিছু স্যাম্পলসহ ২৫৭টি ল্যাবে ১৯ হাজর ৪০৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৫১ লাখ ৭০ হাজার ৬৭টি নমুনা। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৮ লাখ ৪৬ হাজার ৪১০টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১৩ লাখ ২৩ হাজার ৬৫৭টি।

তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, গত একদিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ৬ হাজার ১২১ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। সব মিলিয়ে করোনা থেকে সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৬ লাখ ১৪ হাজার ৯৩৬ জন হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তির ভাষ্য মতে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৬ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং মৃতু্যর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় গত একদিনে যারা করোনায় মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৫৯ জন পুরুষ আর নারী ৪৩ জন। তাদের ৯৭ জন হাসপাতালে এবং ৫ জন বাড়িতে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৬৩ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ২৩ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ১৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল।

মৃতদের মধ্যে ৬৮ জন ঢাকা বিভাগের, ২২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ রাজশাহী বিভাগের, ১ জন খুলনা বিভাগের এবং ৪ জন করে বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ১০ হাজার ৩৮৫ জনের মধ্যে সাত হাজার ৬৯৪ জনই পুরুষ এবং দুই হাজার ৬৯১ জন নারী।

গত বছর ৮ মার্চ বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল তা ৬ লাখ পেরিয়ে যায় গত ২৯ মার্চ। এর ঠিক ১৬ দিন পর ১৪ এপ্রিল মোট শনাক্ত ৭ লাখ ছাড়ায়। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃতু্যর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ৩১ মার্চ তা ৯ হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর মাত্র ১৫ দিনে আরও এক হাজারের বেশি মানুষের মৃতু্য হলো। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় ৩৮তম অবস্থানে রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে