শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১
৫৫ হাজার মেট্রিক টন তরমুজ উৎপাদন

পাইকগাছায় চলতি মৌসুমে তরমুজের বাম্পার ফলন

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি
  ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
পাইকগাছায় চলতি মৌসুমে তরমুজের বাম্পার ফলন

খুলনার পাইকগাছায় চলতি মৌসুমে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। ১৪৪৫ হেক্টর জমিতে ৫৫ হাজার মেট্রিক টন তরমুজ উৎপাদিত হয়েছে। এসব তরমুজের বাজার মূল্য ৭৭ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে দাবি করছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। উৎপাদিত এসব তরমুজ উচ্চমূল্যে বিক্রি করতে পেরে খুশি কৃষক। গত বছরের বৃষ্টিতে তরমুজ চাষের ক্ষতি পুষিয়ে এবার লাভবান চাষিরা। তরমুজের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

উপকূল এলাকার চারপাশে লবণপানি, বেড়িবাঁধের মধ্যে মিষ্টিপানির আঁধার তৈরি করে পাইকগাছার দেলুটি, গড়ুইখালী ও চাঁদখালী ইউনিয়নে তরমুজ চাষ হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এ বছর তরমুজের আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে। হেক্টর প্রতি ফলন ৩৮ থেকে ৪২ টন। মোট ফলন ৫৪ হাজার ৯১০ টন। যার বাজার মূল্য ৭৬ কোটি ৮৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার বেশি হবে। পাইকগাছায় ১০টি ইউনিয়ন মধ্য ৩টি ইউনিয়নে তরমুজ চাষ হয়। এর মধ্যে গড়ুইখালী, দেলুটি ও চাঁদখালীতে তরমুজ চাষ হয়। সবচেয়ে বেশি আবাদ হয়েছে দেলুটি ইউনিয়নে। উপকূলের লবণপানির এলাকায় গড়ুইখালী ইউনিয়নের ঘোষখালী নদী ও দেলুটি ইউনিয়নের ডিহিবুড়া খাল খননে বৃষ্টির (মিষ্টি) পানি সংরক্ষণ করে তরমুজের চাষ করা হয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ তরমুজ ক্ষেত। চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে তরমুজ। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলে জড়ো করে রেখেছেন বিক্রির জন্য। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যাপারীরা তরমুজ কিনতে ক্ষেতে গিয়ে চাষিদের সঙ্গে দরদাম করে ক্ষেতে কিনে নিচ্ছেন। এই তরমুজ ক্ষেত থেকে ট্রলি বোঝাই করে ট্রাক ও কার্গো ভর্তি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানো হচ্ছে। শ্রমিকরা ক্ষেত থেকে তরমুজ তুলে ট্রলিতে করে এনে ট্রাক ও কার্গো লোড করছে। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই ক্ষেত থেকে তুলে বাজারজাত করার জন্য ব্যস্ত চাষি ও ব্যাপারীরা। বাজার দাম ভালো পাওয়ায় খুশি কৃষকরা। কেউ ক্ষেত হিসেবে তরমুজ বিক্রি করছেন আবার কেউবা পাইকারি বাজারে তরমুজ বিক্রি করছেন। এতে উৎপাদন খরচ পুষিয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

ইতোমধ্যে ৬০ শতাংশ তরমুজ ক্ষেত বিক্রি হয়ে গেছে। ৪০ শতাংশ তরমুজ কৃষকের ক্ষেতে রয়েছে। প্রতিদিন পাইকগাছা ও পাশের আমাদি থেকে ২ থেকে ৩ শত ট্রাক তরমুজ ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যাচ্ছে ব্যবসায়ীরা।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, বিগত বছরে তরমুজ চাষে আর্থিকভাবে লোকসান হলেও এবার লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। তবে অনাবৃষ্টির কারণে পানি দিতে অধিক টাকা খরচ হয়েছে। দেলুটি ইউনিয়নের লোচন সরকার বলেন, আমি ৫ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত বছরের তুলনায় এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে।

গড়ুইখালী ইউনিয়নের কানাখালী গ্রামের বিজন কুমার মন্ডল বলেন, আমি চার বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। আমার জমিতে খরচ বাদে দেড় লাখ টাকা লাভ থাকবে বলে আশা করছি।

পাইকগাছা উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসিম কুমার দাশ জানান, এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে। তবে মিষ্টি পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় তরমুজ চাষে কিছুটা সমস্যা হয়েছে। এসব এলাকায় খাল খনন করে মিষ্টি পানি সংরক্ষণ করতে পারলে তরমুজের চাষ আরও বাড়ানো যেত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে