রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

মর্মান্তিক...

যাযাদি ডেস্ক
  ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

একমাত্র ছেলের বিয়ের জন্য বাড়িকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছিল। ছিল ঝলমলে আলোকসজ্জা। প্রস্তুত করা হয়েছিল বাসরঘর। আলোকসজ্জার একটি ছেঁড়া বৈদু্যতিক তার ঘরের বারান্দার গ্রিলের সঙ্গে ঠেকেছিল। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে নববধূকে নিয়ে বাসরঘরে ঢোকার আগে সেই গ্রিলে বরের হাত লাগে। বিদু্যতায়িত হন তিনি। স্বজনরা উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী ৪

উপজেলার খারিজাগাতি মোলস্নাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিদু্যৎস্পৃষ্টে মারা যাওয়া শাকিল হোসেন (২১) ওই এলাকার আবদুস সালামের ছেলে। শাকিল একজন চাল ব্যবসায়ী ছিলেন। ওইদিন দুপুরে একই উপজেলার বিদিরপুর গ্রামের আসমা খাতুনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। শ্বশুরবাড়িতে পা রাখার পরই স্বামীকে হারিয়েছে এই নববধূ।

স্থানীয় সূত্রে খবর নিয়ে জানা যায়, শাকিলের মরদেহ শুক্রবার সকালে বাড়ির পাশের কবরস্থানে দাফন করা হয়। বাড়িটিতে তখনো আলোকসজ্জার বাতি লাগানো ছিল। সাজানো ছিল বাসরঘরও। বরপক্ষের অনুষ্ঠানের জন্য বাড়ির সামনে যে প্যান্ডেল সাজানো হয়েছিল, সেটির নিচে বসে ছিলেন আত্মীয়স্বজন। সবার চোখে-মুখে শোকের ছায়া। একটি ঘরে নির্বাক আসমা খাতুনকে নিয়ে বসেছিলেন তার বাড়ি থেকে যাওয়া স্বজনরা। শাকিলের মা জান্নাতুল মাওয়া শুধু কাঁদছিলেন। তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন স্বজনরা।

পরিবারের লোকজন জানান, গতকাল দুপুরে কনের বাড়িতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। এরপর বিকেলে বরপক্ষ কনে নিয়ে আসে। সন্ধ্যার পর বর নিজেই বাড়িতে আলোকসজ্জার বাতিগুলো জ্বালিয়ে দেন। পরে রাত আটটার দিকে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বারান্দার গ্রিলে শাকিলের হাত লেগে যায়। এতেই তিনি বিদু্যতায়িত হয়ে পড়েন। আলোকসজ্জার বৈদু্যতিক তারের ছেঁড়া একটি অংশে বিদু্যতায়িত হয়েছিল বাড়ির বারান্দার গ্রিল। শাকিলকে বিদু্যতায়িত হতে দেখে তার চাচা তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এরপর তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর রাতেই তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।

শাকিলের মা জান্নাতুল মাওয়া বলেন, 'আমার একটাই ছেলে। কত শখ করে তার বিয়ে দিনু। আমার ছেলে, ছেলের বউ বাড়িতে থাকবে। কত আনন্দ করব। আমার আর কিছুই থাকল না। ছোট মেয়েটাকে এখন কী করে সান্ত্বনা দেব আমি? এই মেয়েটার এখন কী হবে?'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে