শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার দাবি ১৪ দলীয় জোটের

' করোনা মহামারির সংকটকালে যারা স্কুল কলেজ খুলে দেওয়ার উসকানি দিচ্ছে, ছাত্রসমাজের তো শুধু নয়ই তারা দেশ ও জাতির শত্রম্ন '
যাযাদি রিপোর্ট
  ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০

জাতিসংঘ ও ওআইসিতে বাংলাকে দাপ্তরিক ভাষা হিসেবে কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি দেশের অফিস-আদালতসহ সর্বত্র সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার দাবি জানিয়েছে ১৪ দলীয় জোট।

বুধবার অনলাইন পস্নাটফর্ম জুমে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে জোটের শীর্ষনেতারা এ দাবি করেন।

১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে ও মৃণাল কান্তি দাসের সঞ্চালনায় আয়োজিত বৈঠকে অংশ নেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, জাতীয় পার্টি (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম, তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ নজিবুল বশর, গণআজাদী লীগের সভাপতি এসকে শিকদার, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, সাম্যবাদী দলের মোসায়েদ আহমেদ, ন্যাপের ইসমাইল হোসেন, সমাজতান্ত্রিক দলের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান ও গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন।

সভাপতির বক্তব্যে আমির হোসেন আমু বলেন, করোনা মহামারির সংকটকালে যারা স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার উস্কানি দিচ্ছে, ছাত্রসমাজের তো শুধু নয়ই তারা দেশ ও জাতির শত্রম্ন।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখুন। তার নেতৃত্বে আমরা করোনায় বড় ক্ষতি থেকে বেঁচে গেছি। আরেকটু ধৈর্য ধরলে পুরো সংকটটি উতরাতে পারব। যে কারণে ১৫ আগস্টের ট্র্যাজেডি হয়েছে, সেই একই কারণে এখন ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলেও দাবি করেন আমু।

ডা. দীপু মনি বলেন, বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে বিকৃত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আল-জাজিরাসহ নানাভাবে না পেরে এখন শিক্ষায় সে চেষ্টা চালাচ্ছে। কিছু চিহ্নিত ব্যক্তির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সেটা প্রতিহত করতে পারব। এ সময় আদালতসহ সবক্ষেত্রে বাংলা ভাষা প্রচলনের মধ্য দিয়ে ভাষার প্রতি মর্যাদা প্রদর্শন করতে হবে বলেও উলেস্নখ করেন তিনি।

জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বলেন, ষড়যন্ত্র শুধু সরকারের বিরুদ্ধে নয়, চলমান ষড়যন্ত্র একটি জাতিকে ধ্বংসের জন্য। সুশাসন নিশ্চিত করে জাতিকে এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করা দরকার।

জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা প্রয়োজন। ঘুষ ছাড়া মানুষ সেবা পায় না, এটা দুঃখজনক। এগুলো রোধ করে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার তালিকায় টিকা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, করোনায় সব স্থবির হয়ে গেছে। তাই শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে আনা দরকার। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এটা গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। অনস্পট নিবন্ধন করে টিকা দেওয়ারও ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।

তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর বলেন, গ্রামের অনেক লোকজন ইংরেজি পড়তে পারে না। বোঝেও না। আমাদের আদালতের রায় পড়তে ও বুঝতে তাদের অন্যের কাছে যেতে হয়, অনেক সময় প্রতারিত হয়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এজন্য সব রায় বাংলায় দেওয়ার জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে অনুরোধ করছি।

তিনি আরও বলেন, ওয়াজ-মাহফিলে বঙ্গবন্ধু, ভাষা ও জাতীয় সংগীত নিয়ে কটাক্ষ হয়। অবশ্য বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটাক্ষ বন্ধ হয়েছে। সবাই জানি কটাক্ষকারীরা ৫-৭ জনের বেশি হবে না। এ বিষয়ে সভাপতির মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। তিনি হস্তক্ষেপ করলে এগুলো বন্ধ হবে।

গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, জাতিসংঘের পাশাপাশি ওআইসিতেও দাপ্তরিক ভাষা বাংলাকে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে।

ন্যাপের ইসমাঈল হোসেন বলেন, রমজান আসার আগেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। সব সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।

সমাজতান্ত্রিক দলের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান তার বক্তব্যে ১৪ দলের বিষয়ে নানা অসন্তোষ তুলে ধরেন। পাশাপাশি ভাষার সুফল সাধারণ মানুষের ঘরে পৌঁছাতে এবং গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদ শতভাগ বাস্তবায়নের দাবি জানান।

গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, জাতিসংঘের দপ্তরে বাংলা ভাষা এখনো কার্যকর হয়নি। সেটা করার উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের আদালতসহ সব জায়গায় বাংলা ভাষার প্রচলন করে ভাষা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে