রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

জমি-ফ্ল্যাট নিবন্ধনে কর কমানোর চিন্তা

সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলো বলছে- কিছু এলাকায় বিভিন্ন হারে কর নির্ধারণ বিষয়টি ভূমি জরিপ রেকর্ডে অনুপস্থিত রয়েছে। যেমন- ভূমি জরিপ রেকর্ডে সায়েদাবাদ ও গুলশানের মতো কোনো এলাকা নেই, কারণ সেগুলো ডোঙ্গারা ও রানাভোলা মৌজার আওতাধীন।
অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
  ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের বাজেটে জমি-ফ্ল্যাট নিবন্ধনে কর দ্বিগুণ করার পাশাপাশি জমির ক্রয়-বিক্রয়ের মূল্যের পার্থক্যের ওপর ১৫ বা তার বেশি শতাংশ হারে গেইন ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছে। এরপর থেকে জমি এবং ফ্ল্যাট মালিকরা স্থাবর সম্পত্তি রেজিস্ট্রেশন থেকে নিজেদের বিরত রেখেছেন। এনবিআর বলছে, যার ফলে জুলাই ও আগস্ট মাসে কর আদায় কমেছে ২০-৩০ শতাংশ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, 'উচ্চ কর আরোপের পর জমি ও ফ্ল্যাট নিবন্ধনের বাস্তব চিত্রের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। সাধারণত যারা জমি বা ফ্ল্যাট ক্রয় করেন তারা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মালিক বা ডেভলপারদের কাছ থেকে মালিকানা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে রেজিস্ট্রেশন আশঙ্কাজনক হারে কমেছে। আমরা এসব বিষয় বিবেচনায় নিচ্ছি।'

তিনি বলেন, পরিসংখ্যান অনুযায়ী চলতি বছরের জুলাই মাসে ঢাকার ১৭ সাব-রেজিস্ট্রার অফিস থেকে মাত্র ৩২ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ হয়। যেখানে একই সময়ে গত বছর এসেছিল ১০১ কোটি টাকা। গত বছরের জুলাইয়ের চেয়ে এ বছরের জুলাইয়ে জমি ও ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রেশন বাবদ ৬৯ কোটি টাকা কম কর আদায় হয়েছে। আগস্ট মাসেও একই ধারা অব্যাহত ছিল।

অন্যদিকে এনবিআর সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলো কর বৃদ্ধির পাশাপাশি এনবিআর-নির্ধারিত এলাকাভিত্তিক কর আদায়ে জটিলতার কারণে রাজস্ব আদায় হ্রাস নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এনবিআরে চিঠি পাঠিয়েছে। এর পাশাপাশি বাণিজ্যিক ও আবাসিক এলাকার করের হার নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা সমাধানের ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন।

সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলো বলছে- কিছু এলাকায় বিভিন্ন হারে কর নির্ধারণ বিষয়টি ভূমি জরিপ রেকর্ডে অনুপস্থিত রয়েছে।

যেমন- ভূমি জরিপ রেকর্ডে সায়েদাবাদ ও গুলশানের মতো কোনো এলাকা নেই, কারণ সেগুলো ডোঙ্গারা ও রানাভোলা মৌজার আওতাধীন। সাব-রেজিস্ট্রাররা তাদের রেকর্ডে এমন নাম না থাকার কারণে এলাকাগুলো থেকে সঠিক পরিমাণে কর আদায় করতে সক্ষম হচ্ছেন না। এ ছাড়াও, আয়কর বিভাগের নির্দেশনায় বাণিজ্যিক এবং আবাসিক এলাকার করের হার ভিন্ন, কিন্তু মৌজা হিসেবে এলাকাগুলো সংজ্ঞায়িত করতে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে সাব-রেজিস্ট্রার অফিসগুলো। এসব সমস্যা সমাধানে পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, ডেমরা, চট্টগ্রামসহ কয়েকটি এলাকার সাব-রেজিস্ট্রারদের সঙ্গে ইতোমধ্যে বৈঠক করেছে এনবিআরের আয়কর শাখা।

ওই বৈঠকেও সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

একই সঙ্গে জমি ক্রয় এবং বিক্রয় এখন কালো টাকা সৃষ্টির অন্যতম প্রধান উৎস, কারণ ক্রেতা বা বিক্রেতা কেউই তাদের ক্রয় নথিতে জমির প্রকৃত মূল্য দেখান না। এসব বিষয় কীভাবে সমাধান করা যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সাব-রেজিস্ট্রার অফিস।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে