সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

সোনাইমুড়ীতে নানা প্রতিষ্ঠান-সংগঠনের আড়ালে সক্রিয় জামায়াত!

সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
  ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:৪৫
সোনাইমুড়ীতে নানা প্রতিষ্ঠান-সংগঠনের আড়ালে সক্রিয় জামায়াত!

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ীতে বিভিন্ন নামের আড়ালে শক্তি সঞ্চয় করছে জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন বাতিল করলেও তারা মাঠ ছাড়েনি। সময় সুযোগ বুঝে জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড সচল রেখেছে বিভিন্ন মাধ্যমে।

সূত্র বলছে,সোনাইমুড়ীতে প্রকাশ্যে সাংগঠনিক কোন অফিস না থাকলেও কোচিং সেন্টার, হাসপাতাল, সাংস্কৃতিক একাডেমি, সাংবাদিক সংগঠন, নানা ক্লাব ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনাসহ নানাভাবে তারা নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে আসছে। ভার্চুয়াল ও প্রযুক্তির সহায়তায় তারা আলোচনা ও বৈঠক করছেন।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়াতে অনলাইনে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে। সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক কার্যক্রম চলছে- হোয়াটস অ্যাপ, ভাইবার, মেসেঞ্জারসহ বিভিন্ন মাধ্যমে কর্মীদের সঙ্গে সাংগঠনিক যোগাযোগ রাখছেন নেতারা। সুযোগ পেলেই তারা বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন। অনলাইন লাইব্রেরির মাধ্যমে সংগঠনের আদর্শ প্রচার করছেন।উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে ভোর বেলায় চলছে নিয়মিত বৈঠক ও কার্যক্রম। জামায়াত ও শিবিরের অনেকেই আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগসহ ক্ষমতাসীন দলের একাধিক অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন ইউনিটে ঢুকে গেছে। অনেক স্থানে জামায়াত পরিচয় গোপন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সংগঠনের কলকাঠি নাড়ছে। গোয়েন্দাদের খাতায় আত্মগোপনে থাকা উপজেলা নেতারা নিয়মিত বৈঠক করছেন। বিভিন্ন দিবসেও তারা কর্মসূচি পালন করছে। পুরো উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে তাদের নেটওয়ার্ক ও কার্যক্রম চলছে আগের মতোই। এসব ঘটনায় দায়েরকৃত নাশকতার মামলায় জামায়াত-শিবিরের অনেক নেতাকর্মী আটক হয়। তবুও দমেনি জামায়াত-শিবির। কৌশল পাল্টে চলছে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম।যদিও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়ে জামায়াতের কর্মীরা কয়েক দফা প্রকাশ্যে শোডাউনও করেছে, যেমন বিজয় দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ইত্যাদি।

জেলা সদরে কৃষি কার্যক্রমের আড়ালে বৈঠকে আটক হয় সোনাইমুড়ী উপজেলার কয়েকজন জামায়াত নেতা। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিভিন্ন সময় জামায়াত নেতাদের গ্রেপ্তারের পর তাদের কাছ থেকে কয়েকটি ল্যাপটপ ও অন্যান্য নথি উদ্ধার করে ডিবি। জামায়াত তাদের নিয়ন্ত্রিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বাড়ানোয় মনোযোগ দিয়েছে। তরুণদের টার্গেট করে সেখানে চাকরি দেয়া হচ্ছে। পরে বানানো হচ্ছে কর্মী।

গোয়েন্দা সূত্র মতে, উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিজেদের লোকজন ঢোকাতে অভিনব পন্থা নিয়েছে জামায়াত। বিভিন্ন ভূইঁফোড় পত্রিকার আইডি কার্ড সংগ্রহ করে জামায়াতকর্মীরা সাংবাদিকতার আড়ালে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এই ধরনের সংবাদ কর্মীদের কোন নিউজ পত্রিকায় ছাপা হয় না। সাংবাদিকতার কার্ড গলায় ঝুলিয়ে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। পৌর জামায়াতের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপজেলা সাংবাদিক সংগঠনের সদস্য হয়েছেন। এসব সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে দুইজনকে ইতিমধ্যে নাশকতা মামলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আটকও করেছে।

উপজেলা আওয়ামীলীগের নির্ভর যোগ্য সূত্র জানিয়েছেন, উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন দলের ছত্রছায়ায় জামাত সক্রিয় উঠেছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামে জামাতের কর্মীরা তাদের দলীয় কর্মকান্ড নির্বিঘ্নে পরিচালনা করছে। সামনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তাদের কর্মীরা নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যাযাদি/এসএস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে