শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সৌদি আরবে অস্ত্র বিক্রি ঠেকাতে তৎপর মার্কিন আইনপ্রণেতারা

যাযাদি ডেস্ক
  ১৪ জুন ২০১৯, ০০:০০

সৌদি আরবে ট্রাম্প প্রশাসনের অস্ত্র বিক্রি ঠেকাতে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে নতুন আইন প্রস্তাব করেছেন ডেমোক্রেট সদস্যরা। কংগ্রেসম্যান টেড লিউয়ের আনা ওই প্রস্তাবে হোয়াইট হাউসে সম্প্রতি অনুমোদন পাওয়া সৌদি আরবের সঙ্গে ২২টি অস্ত্র বিক্রি চুক্তি বাতিলের কথা বলা হয়েছে। প্রতিনিধিদের দাবি, ইরানের হুমকির কথা বলে এই চুক্তি করা হলেও তেমন কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি ট্রাম্প প্রশাসন। ডেমোক্রেট কংগ্রেসম্যানদের দাবি, এই চুক্তি হলে ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি অস্ত্রের আঘাতেই প্রাণ হারাবে হাজার হাজার বেসামরিক। সংবাদসূত্র : বিবিসি, এএফপি, রয়টার্স

সম্প্রতি কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়ে সৌদি আরবের কাছে ৮০০ কোটি ডলারের অস্ত্র বিক্রি করার চুক্তি করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ধরনের অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে সাধারণত মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদনের দরকার হলেও বিশেষ অবস্থায় প্রশাসনিক আদেশ দিয়ে তা অনুমোদনের ক্ষমতা ব্যবহার করেছেন ট্রাম্প। বিশেষ অবস্থা ঘোষণার কারণ হিসেবে ইরানের কাছ থেকে হুমকি বৃদ্ধির দাবি করেছেন তিনি। গত শুক্রবার ট্রাম্পের প্রশাসনিক এই আদেশের বিষয়টি কংগ্রেসকে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। তবে ডেমোক্রেট সদস্যদের অভিযোগ, পার্লামেন্টে কঠোর বিরোধিতার মুখে পড়ার আশঙ্কাতেই কংগ্রেসকে পাশ কাটিয়েছেন ট্রাম্প।

এক বিবৃতিতে টেড লিউ বলেন, তাড়াহুড়া করে এই ঘোষণা আসলে প্রশাসনের অপব্যবহার ছাড়া কিছুই না। তারা এমন প্রশাসন, যারা 'না' শুনতে চায় না। তিনি বলেন, 'এত জরুরি কিছুই ছিল না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি অস্ত্র দিয়ে ইয়েমেনে হাজার হাজার বেসামরিককে হত্যা করেছে। আর কংগ্রেসও অভিযোগ করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গেছে।'

প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য ডেভিন সিসিলিন, আবিগেইল স্প্যানবার্গার এবং টম মালিনোস্কিও আইন প্রস্তাব করেন। সেখানে আরও নির্দিষ্ট করে 'স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুঁজে বের করা' সামরিক অস্ত্রের কথা বলা হয়। ইয়েমেন সৌদি নেতৃত্বাধীন মার্কিন জোটের যুদ্ধে এই অস্ত্রের কারণেই অনেক বেসামরিক মারা যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

গত মাসে কংগ্রেসকে ওই চুক্তির ব্যাপারে জানায় ট্রাম্প প্রশাসন। সেখানে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জর্ডানে ৮১০ কোটি ডলারের ২২টি পৃথক অস্ত্র বিক্রি চুক্তির কথা বলা হয়। জরুরি ভিত্তিতে এই চুক্তি করার ক্ষেত্রে ইরানের হুমকি সামনে হাজির করা হলেও এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন আইনপ্রণেতারা। যারা এই পদক্ষেপে ক্ষুব্ধ হয়েছেন, তাদের মধ্যে ট্রাম্পের অনেক মিত্রও আছেন।

কংগ্রেস সদস্যরা ইয়েমেনের মানবিক পরিস্থিতি ও সাংবাদিক জামাল খাশোগির হত্যাকান্ডের কারণে সৌদি সরকারের সঙ্গে এমন চুক্তির ব্যাপারে আগ্রহী ছিলেন না। টম মালিনোস্কি বলেন, 'ট্রাম্প প্রশাসন আমাদের কাছে এমন কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি, যেখানে বোঝা যায় আরব দেশগুলো ইরানের হুমকিতে রয়েছে। কিংবা এই অস্ত্র প্রয়োজন, বা হুমকি মোকাবেলায় ইয়েমেনের বোমা হামলা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, 'আমরা এই অস্ত্র বিক্রির অনুমোদন দিলে এমন একটি যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হবে, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্বার্থ নেই। একইসঙ্গে আভাস মিলবে যে সৌদি আরব যেকোনো কিছু করে পার পেয়ে যাবে। কংগ্রেস তার হতে দিতে পারে না।

উলেস্নখ্য, ২০১৪ সালে ইয়েমেনে শুরু হয়েছিল গৃহযুদ্ধ। হুতি ও সালেহ জোট রাজধানী সানা দখল করলে দেশটির প্রেসিডেন্ট হাদি সৌদি আরবে নির্বাসনে যান। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় ২০১৫ সালের মার্চ মাস থেকে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ইয়েমেনে হামলা চালানো শুরু করে। সৌদি আরবের দাবি, হুদাইদা বন্দর দিয়ে হুতিরা প্রতিমাসে তিন থেকে চার কোটি মার্কিন ডলার রাজস্ব আয় করে, যা দিয়ে তারা ইরান থেকে অস্ত্র কেনে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হওয়া সংঘর্ষে ভেঙে পড়ে হুদাইদা বন্দরের পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<53411 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1