শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান

আশার কথা, প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের তুলনায় ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূরীকরণে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। সব ধরনের সামাজিক সূচকে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে। আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ অচিরেই উন্নয়নশীল দেশের কাতার থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে এই আশাবাদ দেশের সচেতন মানুষের। আমাদের ২০৪১ সালের মধ্যে দাঁড়াতে হবে উন্নত দেশের কাতারে। একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, বেড়েছে শিক্ষা ও সচেতনতার হার। অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। তবে নারীর প্রতি সহিংসতা এখনো কমেনি।
সালাম সালেহ উদদীন
  ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

বাংলাদেশ অপার সম্ভাবনাময় একটি দেশ- এ কথা বারবার উচ্চারিত হয়ে আসছে। ধীরে ধীরে এই সম্ভাবনার সফল বাস্তবায়ন ঘটে চলেছে। তবে এটা একদিনে হয়নি। এর ব্যাখ্যা করতে হলে একটু পেছনে তাকাতে হয়। ১৯৪৭ সালে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ভাগ হয়ে পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল। তখন এই ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যে, হিন্দু-মুসলমান আলাদাভাবে দুই দেশে বাস করলে উপমহাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে। ভাইয়ে ভাইয়ে দাঙ্গা বা সংঘাত রক্তপাত হবে না। পাকিস্তান ভাগ হয়ে যাওয়ার পর বাঙালি মুসলমানরা নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করল। কিন্তু বছর পেরোতে না পেরোতেই তারা হোঁচট খেল। পূর্ববঙ্গের মানুষ যখন দেখল যে, তাদের শ্রমে-ঘামে উৎপাদিত পণ্য পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং পরবর্তী সময়ে আবার উচ্চমূল্যে তাদের কাছেই বিক্রি করছে। কী সাংঘাতিক ঘটনা। এরপর থেকেই পূর্ববঙ্গের মানুষের স্বপ্ন ভঙ্গ হওয়া শুরু হলো। এই সত্য স্বীকার করেছেন খোদ পাকিস্তানেরই এক নেতা। তিনি একটি প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী। পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনীতিকরা পূর্ববঙ্গে লুটপাট চালিয়েছেন এবং বাঙালিদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই বক্তব্যকে প্রকাশ্যে সমর্থন দিলেন পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ খাত্তাক। তিনি বলেছেন, 'চট্টগ্রামের পাট থেকে পাওয়া রাজস্ব দিয়েই সম্ভবত ইসলামাবাদের রাস্তাঘাট বানানো হয়েছে।' বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও প্রকারান্তরে ভুলের কথা স্বীকার করেছেন। এ কথা স্বীকার করে আসছেন পাকিস্তানের উদারপন্থী বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও শিক্ষকরা।

এটা চরম সত্য যে, পাকিস্তান আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ একটি দেশ। একাত্তর সালে আমরা রাজনৈতিকভাবেই পাকিস্তানকে মোকাবেলা ও পরাজিত করে অনেক ত্যাগ আর সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছি। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পার করে এ কথা দ্বিধাহীনচিত্তে বলা যায়, সবদিক থেকেই আমরা পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে। গণতন্ত্র, মানবাধিকার, আইনের শাসন, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি সব সূচকেই বাংলাদেশের অবস্থা পাকিস্তানের চেয়ে ভালো ও উন্নততর। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, অর্থ সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উচ্চ প্রবৃদ্ধি হার ও নিম্ন জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের কারণে এ সাফল্য অর্জন করছে বাংলাদেশ। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ যখন স্বাধীনতা লাভ করে তখন দেশটি বেশিরভাগ অর্থ-সামাজিক সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে অনেক পিছিয়ে ছিল। আজ বাংলাদেশ পাকিস্তানের চেয়ে মানব উন্নয়নের সব সূচকে এগিয়ে। এর কারণ পাকিস্তান সন্ত্রাসবাদ ও পরমাণু অস্ত্র উৎপাদনে তার সময় ও সম্পদ বিনিয়োগ করেছে। ফলে আজ বাংলাদেশের পেছনে পড়ে আছে পাকিস্তান। বিশ্বব্যাংকের এক হিসাব অনুযায়ী, নব্বইয়ের দশকে পাকিস্তানিদের মাথাপিছু গড় আয় ছিল ২০৬০ ডলার, ভারতের ১১২০ ডলার এবং বাংলাদেশের মাত্র ৮৫০ ডলার। বাংলাদেশের মাথাপিছু গড় আয় ৫ গুণ বেড়ে হয়েছে ৪০৪০ ডলার। ভারতের আয় পৌঁছেছে ৭০৬০ ডলার এবং পাকিস্তানের ৫৮৩০ ডলার। আশির দশকে পাকিস্তানের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৬ শতাংশ, ভারতের ৫ দশমিক ৩ শতাংশ এবং বাংলাদেশের ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। এখন পাকিস্তানের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪ দশমিক ৭ শতাংশ আর বাংলাদেশের ৬ দশমিক ৬ শতাংশ ( বর্তমানে ৭ এর ওপরে) এবং ভারতের ৮ দশমিক ২ শতাংশ। এ ছাড়া পাকিস্তানের জনসংখ্যা বাড়ছে বাংলাদেশের দ্বিগুণ গতিতে। মানব উন্নয়ন সূচক বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের জীবন ধারণের মান, শিক্ষা, নিরক্ষরতা প্রভৃতির একটি তুলনামূলক সূচক। এই সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়ে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের দুর্ভাগ্য, সেখানে গণতন্ত্র স্থায়ী হতে পারেনি। পাকিস্তান জন্মের পর থেকেই আমরা দেখে আসছি, সেখানে একের পর এক স্বৈরশাসকের আবির্ভাব ঘটেছে এবং বছরের পর বছর সামরিক হস্তক্ষেপ ও আধিপত্যের কারণে দেশের গণতন্ত্র বিপন্ন হয়েছে। রাজনৈতিক হত্যা তো সেখানকার প্রায় নৈমিত্তিক ব্যাপার। যার কারণে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান আজো দাঁড়াতে তো পারেনি। অথচ বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। উন্নয়নের রোল মডেল এখন বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক বিশ্ব এখন বাংলাদেশের প্রশংসা করছে।

এ দেশের মানুষ পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদ করে মাতৃভাষার দাবিতে। '৫২-র ভাষা আন্দোলনের রক্তাক্ত পথ বেয়েই আসে স্বাধীনতা, আসে বিজয়। বাংলার আকাশে-বাতাসে ধ্বনিত হয় একসাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা অথবা পূর্বদিগন্তে সূর্য উঠেছে, রক্ত লাল রক্ত লাল, এমনি নানা ধরনের স্বাধীনতা ও বিজয়ের গান। এ গণজাগরণমূলক উদ্দীপনাময় গানই কি বাঙালিকে পরিপূর্ণতা দিয়েছে। এত ত্যাগ সংগ্রাম আর রক্তের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতাকে অর্থপূর্ণ মর্যাদাপূর্ণ করতে হবে। এ কথা কোনোভাবেই অস্বীকার করার উপায় নেই, স্বাধীনতার পরে যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশ পুনর্গঠনে অনেক বেগ পেতে হয়। স্বাধীনতার পরপরই দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে দেশ। ভঙ্গুর অর্থনীতি নিয়ে যাত্রা শুরু হয় একটি স্বাধীন দেশের। এ সময় বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে তিরস্কার করেছিল বিশ্বের অনেক দেশই। যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল তলাবিহীন ঝুড়ি। আর এখন স্বাধীনতার ৪৮ বছরে বাংলাদেশ আর তলাবিহীন ঝুড়ি নেই। খোদ বিদেশি অতিথি, বিশ্বব্যাংক প্রধান ও রাষ্ট্রনায়করাই বাংলাদেশের গুণকীর্তন করছেন। কেউ কেউ বলছেন, বাংলাদেশ হচ্ছে এশিয়ার বাঘ। বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচনে সাফল্য অর্জন করেছে। খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও খাদ্য উদ্বৃত্ত রাখার কৃতিত্ব অর্জন করেছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে শেখ হাসিনা সরকার। তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। দেশের দরিদ্রজনগোষ্ঠীর অভাব হাহাকার আর চোখে পড়ে না। বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, 'এখানকার দরিদ্র নারীদের পরিবর্তন দেখে আমি খুব খুশি হয়েছি। বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে আমি মুগ্ধ।'

আশার কথা, প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তানের তুলনায় ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূরীকরণে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। সব ধরনের সামাজিক সূচকে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে। আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ অচিরেই উন্নয়নশীল দেশের কাতার থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে এই আশাবাদ দেশের সচেতন মানুষের। আমাদের ২০৪১ সালের মধ্যে দাঁড়াতে হবে উন্নত দেশের কাতারে। একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়ন এখন দৃশ্যমান। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, বেড়েছে শিক্ষা ও সচেতনতার হার। অভ্যন্তরীণ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে। তবে নারীর প্রতি সহিংসতা এখনো কমেনি।

পরিকল্পিত অর্থনৈতিক কার্যক্রম, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি যেমন, ভিজিডি, ভিজিএফ, জিআর, ওএমএস, টেস্ট রিলিফ, কাবিখা ইত্যাদি, সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, জিডিপি প্রবৃদ্ধির উচ্চ হার, গ্রামীণ এলাকায় সড়ক ও জনপথের ব্যাপক উন্নয়ন এবং সংযুক্তি, গ্রামীণ অকৃষি কর্মসংস্থান, প্রবাসী আয় অব্যাহতভাবে বাড়া ও ব্যাপক বিদু্যতায়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়নের কারণেই দেশের এই সাফল্য এসেছে। যে করেই হোক এই অগ্রগতি ধরে রাখতে হবে। একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের পরিচিতি বহু বছর ধরে। ধর্ম-বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে সব ধরনের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বাঙালির একটি ঐতিহ্যগত ঐতিহাসিক ব্যাপার। এটা বাঙালির গর্ব করার মতো বিষয়। উলেস্নখ্য, ৩০ ডিসেম্বর, ২১০৮ তারিখ অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের ইতিহাসের আরেক গুরুত্বপূর্ণ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে সব জল্পনা-কল্পনা, জরিপ, হিসেব-নিকেশ, গণনা, ভবিষ্যদ্বাণী ইত্যাদি সব কিছুকে ছাড়িয়ে বিপুল বিজয় অর্জন করল মুক্তিযুদ্ধের ধারক-বাহক এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। টানা তৃতীয়বার ও চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন শেখ হাসিনা। এর ফলে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেলেন তিনি। একমাত্র তিনিই বিশ্বের দীর্ঘস্থায়ী নারী সরকারপ্রধান। বঙ্গবন্ধুর কন্যা হিসেবে তিনি তার যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। তার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে। এই সরকারের মেয়াদ পূর্ণ হলে তিনি বাংলাদেশে ২০ বছরের রাষ্ট্র পরিচালনাকারী প্রধানমন্ত্রীর স্বীকৃতি পাবেন, যা হবে স্বাধীন বাংলাদেশে একটি অনন্য রেকর্ড। এর আগে বাংলাদেশে যারা সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের কেউই চারবারের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পাননি। তিনিই একমাত্র সরকারপ্রধান যিনি তৃতীয় মেয়াদে টানা ১৫ বছর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাষ্ট্র পরিচালনাকারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাস সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন। তার সরকারের আমলে ১০ বছরের উন্নয়ন দৃশ্যমান। এর মধ্যে রয়েছে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ, ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ, পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণ ও সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ। স্বাধীনতার সময়ে আমাদের অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও একটি ভঙ্গুর অর্থনীতি ছিল। সে অবস্থা থেকে এক ধরনের টেকসই ভিত্তি তৈরি করা গেছে বর্তমান অর্থনীতিতে। যার ফলে আমাদের উলেস্নখযোগ্য কয়েকটি দিক তৈরি হয়েছে। যেমন প্রবৃদ্ধির মাত্রাগুলো একটি গতি ধরে এগিয়েছে। দেশের শহর থেকে গ্রামগঞ্জ সবখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। যা দেশের গন্ডি পেরিয়ে প্রশংসিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মহলেও। নিজস্ব অর্থে পদ্মার ওপর ৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ করার সাহস দেখাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশের প্রথম স্যাটেলাইট 'বঙ্গবন্ধু-১' মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে। এর সুফলও ভোগ করতে যাচ্ছে দেশ। এ ছাড়া মেট্রোরেল, এলিভেটেট এক্সপ্রেসসহ আরো কিছু বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার। বঙ্গোপসাগরে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি টেরিটরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল এলাকায় একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপান এলাকার প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া স্বাধীনতার পরপর ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে যে স্থল সীমান্ত চুক্তি হয়েছিল সম্প্রতি তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ছিটমহল সমস্যার সমাধান করা বাংলাদেশের বড় অর্জন বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।

\হসর্বশেষ রোহিঙ্গা ইসু্যতেও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসা পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৪ সালে ইউনেস্কো তাকে 'শান্তির বৃক্ষ' ও ২০১৫ সালে ওমেন ইন পার্লামেন্টস গেস্নাবাল ফোরাম নারীর ক্ষমতায়নের জন্য তাকে রিজিওনাল লিডারশিপ পুরস্কার এবং গেস্নাবাল সাউথ-সাউথ ডেভেলপমেন্ট এক্সপো-২০১৪ ভিশনারি পুরস্কারে ভূষিত করে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরিবেশ এবং টেকসই উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য লিডারশিপ ক্যাটাগরিতে শেখ হাসিনাকে তাদের সর্বোচ্চ পুরস্কার 'চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা আর্থ-২০১৫' পুরস্কারে ভূষিত করেছে। টাইম ম্যাগাজিনের বিবেচনায় বিশ্বের প্রভাবশালী ১০ নারী নেত্রীর একজন মনোনীত হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। একজন জাতীয়তাবাদী নেতা হিসেবে শেখ হাসিনা সবসময় নিজেকে প্রমাণ করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যের শীর্ষস্থানীয় দৈনিক খালিজ টাইমস রোহিঙ্গাদের সংকট মোকাবেলায় শেখ হাসিনার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির জন্য তাকে 'নিউ স্টার অব দ্য ইস্ট' বা 'পূর্বের নতুন তারকা' হিসেবে আখ্যায়িত করে। অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ। এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারলে বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। আমরাও হব বিশ্বের বুকে একটি গর্বিত জাতি।

সালাম সালেহ উদদীন: কবি, কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক ও কলাম লেখক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<46520 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1