শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচন-২০২০

ভোট দেওয়ার আগ্রহ কমছে

'সমাজের ক্ষমতাবানরা এদেশে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করেন, তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থ হুমকির মুখে পড়ুক তা তারা চান না'
যাযাদি ডেস্ক
  ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
ডোনাল্ড ট্রাম্প জো বাইডেন

আগামী ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন মূল দুই প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন। রোববার দেশটির নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, শুধু গত আগস্টেই নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্পের ব্যয় হয়েছে ৬১ দশমিক দুই মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৫১৮ কোটি ১৫ লাখ ৭৬ হাজার ৯৪৮ টাকা। তবে এত টাকা খরচ করলেও দেশটির অনেক ভোটার ভোট দেওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, নির্বাচন ঘনিয়ে এলেও দেশটির অনেক ভোটার রয়ে গেছেন, যারা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি কাকে ভোট দেবেন। মূল দুই প্রার্থী ট্রাম্প ও বাইডেন উভয়েই চেষ্টা করছেন এই ঝুলন্ত ভোটারদের কাছে টানতে। তবে এমন ভোটারদের অনেকেই এই দুই প্রার্থীর কাউকে নিয়েই খুশি নন। তারপরও নির্বাচনী প্রচারণায় ঝুলন্ত ভোটারদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প ও বাইডেন।

রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেট উভয় শিবির থেকেই বলা হচ্ছে, ২০২০ সালের এই নির্বাচন হচ্ছে ভোটারদের জীবনকালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তারা প্রচারাভিযানের জন্য গত কয়েক সপ্তাহে যে পরিমাণ অর্থ তুলছেন, তাও নতুন রেকর্ড তৈরি করেছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এবারের নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ বাড়বে। কিন্তু গণমাধ্যমগুলো বলছে, এবার ভোটারের সংখ্যা কম হতে পারে।

আমাদের কোনো ভালো প্রার্থী নেই

হিউস্টনের ৩২ বছরের সাইকিয়াট্রিক নার্স সামিয়ান কাজি বলেন, 'আমি এই নির্বাচনের ব্যাপারে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি।' তার ভাষায়, 'আমাদের ভালো কোনো প্রার্থী নেই। এদেশের সুন্দর ভবিষ্যতের আশা জাগবে বা মানুষের জীবন উন্নত হবে, এমন কোনো কিছুই আমরা এই প্রার্থীদের কাছ থেকে পাচ্ছি না।' সামিয়ান জানান, তিনি আগেকার নির্বাচনগুলোতে নিয়মিত ভোট দিয়েছেন। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আর ২০১৮ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনে তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টিকেই ভোট দিয়েছেন। এবার তার পছন্দের প্রার্থী ছিলেন বার্নি স্যান্ডার্স। কিন্তু ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী নির্বাচনে এই বামপন্থী প্রার্থী হেরে গেছেন। এরপর থেকে সামিয়ান অনেকটা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।

সামিয়ান বলেন, 'সমাজের যে ক্ষমতাবানরা এদেশে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করেন, তারা তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থ হুমকির মুখে পড়ুক তা চান না। আসলে যুক্তরাষ্ট্র এখনো একটি গণতান্ত্রিক দেশ হতে চাইছে কিনা এটাই আমার সন্দেহ হয়। এ দেশটি আসলে একটি পস্নুটোক্রেসি বা ধনিকতন্ত্র। ধনীদের নিয়ন্ত্রণ হুমকির মুখে ফেলতে পারে, এমন কোনো কাঠামোগত বা অর্থনৈতিক পরিবর্তনের কথা এখানে নিষিদ্ধ। কেউ এমন কিছু করতে চাইলেই তাকে সরিয়ে দেওয়া হবে।'

রাজনীতির ব্যাপারে অনাগ্রহ বা বিচ্ছিন্নতাবোধের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভোটারদের ভোট দেয়ার হার বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় কমে গেছে। সেখানে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ভোটার ভোট দিতে যান। বারাক ওবামা ও জন ম্যাককেইনের মধ্যে ২০০৮ সালের ভোটযুদ্ধে প্রায় ৬৪ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছিলেন। কিন্তু ২০১৬ সালের নির্বাচনে ভোট দিয়েছিলেন মাত্র ৫৫ শতাংশ ভোটার। অন্যদিকে, ইউরোপীয় দেশগুলোতে ভোটার উপস্থিতির হার প্রায় ৭০ শতাংশ।

উলেস্নখ্য, এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প ও বাইডেন শক্তিশালী প্রার্থী হলেও এর বাইরে আরও প্রার্থী রয়েছেন। তারা হচ্ছেন লিবার্টারিয়ান পার্টির জো ইয়র্গেনসেন, গ্রিন পার্টির হাওয়ি হকিন্স, বার্থডে পার্টির কানিয়ে ওয়েস্ট, অ্যালায়েন্স অ্যান্ড রিফর্ম পার্টির রকি দে লা ফুয়েন্তে এবং কনস্টিটিউশন পার্টির ডন বস্ন্যাংকেনশিপ। তবে রাজনৈতিক বিবেচনায় মূল লড়াই হবে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<112828 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1