আজকের যায়যায়দিন

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু রোববার গোপনে সৌদি আরব সফর করেছেন বলে ইসরাইলি গণমাধ্যম 'হারেৎজ' খবর প্রকাশ করেছে। সেখানে তিনি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও সঙ্গে বৈঠকও করেছেন বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে কোনো পক্ষই এখনো এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেনি। সংবাদসূত্র : বিবিসি, ওয়াশিংটন পোস্ট

খবরটি সত্যি হলে, এটিই হবে ঐতিহাসিকভাবে বৈরি দেশ দুটির মধ্যে প্রথম কোনো বৈঠক, যার খবর প্রকাশ্যে এলো। একই সঙ্গে প্রথম কোনো ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর সৌদি আরব সফরও বটে। ওই বৈঠকে ইসরাইলি গুপ্তচর সংস্থা 'মোসাদ'র প্রধান ছিলেন বলেও জানা যাচ্ছে।

ইসরাইলি সরকারের সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম হারেৎজ বলছে, এই সফরের ব্যাপারে ইসরাইলের বিকল্প প্রধানমন্ত্রী, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীও অন্ধকারে ছিলেন। যদিও এক টুইট বার্তায় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রীর একজন উপদেষ্টা এই বৈঠক হয়েছে বলে আভাস দিয়েছেন। তবে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো পক্ষই এ ব্যাপারে কিছু জানায়নি।

রোববারের এ সফর সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে ইসরাইলি আর্মি রেডিওতে তিনি বলেন, 'আসলে বৈঠক হয়েছে এবং তা প্রকাশ্যেও এসেছে, যদিও এই মুহূর্তে তা পুরোপুরি সরকারিভাবে ঘোষিত বৈঠক নয়। তারপরও এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। এক অভাবনীয় অগ্রগতি।' ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম 'ওয়াইনেট' লিখেছে, সৌদি আরবের উপকূলীয় শহর নিওমে রোববার বিকালের দিকে কয়েক ঘণ্টা অতিবাহিত করেছেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সেই সময় তার সঙ্গে ইসরাইলি গুপ্তচর বাহিনী মোসাদের প্রধান জোসেফ কোহেন ছিলেন। সেখানে তিনি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান আর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গে বৈঠক করেন।

ইসরাইলি আগ্রাসন / গাজার রাফাহতে হামলার প্রস্তুতি চলছে

হারেৎজ-এর খবর বলছে, বিমান চলাচলের তালিকায় দেখা যাচ্ছে, ইসরাইল থেকে একটি বিমান সরাসরি সৌদি মেগা-সিটি নিওমে গেছে। পাঁচ ঘণ্টা পর সেটা আবার ফেরত এসেছে।

অনেকদিন ধরেই ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন চেষ্টা করছে, যাতে ইসরাইলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টায় গত আগস্ট মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত আর বাহরাইন ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেয়। তারা বাণিজ্য চালু করা, নিরাপত্তা ও পর্যটনের ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য একটি সমঝোতা করেছে। ওই সমঝোতাকে প্রতারণা বলে বর্ণনা করেছেন ফিলিস্তিনি নেতারা।

সৌদি আরব এ পর্যন্ত ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে এসেছে। কিন্তু গত আগস্ট থেকে সৌদি আরব উপসাগরীয় দেশগুলোতে ইসরাইলি বিমান চলাচলের জন্য তাদের আকাশসীমা খুলে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এর আগেও বলেছেন, সৌদি আরব ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করুক, সেটিই তিনি আশা করেন। তবে সৌদি আরব এ ব্যাপারে মন বদলেছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে শনিবার সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, সৌদি আরব সম্পর্ক পুরোপুরি স্বাভাবিক করাকে সমর্থন করে।