শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

করোনাভাইরাস: আতঙ্ক ও গুজব

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যাতে দেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যথেষ্ট আন্তরিক ও তৎপর। তবে তার যারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তারা বলছেন ভিন্ন কথা। সরকার নাকি প্রকৃত তথ্য গোপন করেছে। এটা আসলে রাজনীতির ভাষা। তবে মরণঘাতী ভাইরাস নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। প্রকৃত অর্থে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কত এই তথ্য গোপন করে সরকারের কী লাভ। বরং সরকার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে অত্যন্ত সাহসিকতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে। আক্রান্ত দেশ থেকে যারা আগত তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে ১৪ দিন রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কাউকে কাউকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনেও রাখা হয়েছে। যেহেতু এই ভাইরাসের আয়ুষ্কাল ১৪ দিন। মনে রাখতে হবে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া আর কোয়ারেন্টিনে রাখা এক কথা নয়। অনেকেই এটা নিয়ে আতঙ্ক ও গুজব ছড়াচ্ছে, যা অপরাধ। বাংলাদেশের জনগণের আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এবং সাবধানতা অবলম্বন করলে সচেতন হলে আমরা করোনাভাইরাসমুক্ত থাকতে পারব।
সালাম সালেহ উদদীন
  ১৮ মার্চ ২০২০, ০০:০০

বিশ্ববাসী করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত। আতঙ্কিত বাংলাদেশের মানুষও। কারণ এ ভাইরাসের এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কৃত হয়নি। ব্রিটিশ বিজ্ঞানিরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের প্রত্যাশা খুব দ্রম্নত তারা সফল হবেন।

সব মানুষের জীবনকে বিষিয়ে তুলছে যে ক্ষুদ্র দানব, তার নাম 'ভাইরাস'। লাতিন শব্দ 'ভাইরাস'-এর অর্থ 'বিষ'। আবার মানুষ এই 'বিষ'কে মানবকল্যাণেও কাজে লাগাচ্ছে ইদানীং। তবে এটা নিশ্চিত, এই ভয়ঙ্কর ক্ষুদ্র দানবদের পুরোপুরি আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপে বন্দি করতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।

শুধু বিশ শতকেই গুটিবসন্ত প্রাণ কেড়ে নিয়েছে প্রায় ৩০ কোটি মানুষের। প্রথম কে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তা জানা না গেলেও এ পৃথিবীর সর্বশেষ আক্রান্ত ব্যক্তিটি ছিলেন আমাদের বাংলাদেশের রহিমা বানু। বর্তমানে এই দানবটিকে নির্মূল করা সম্ভব হয়েছে। আরেকটি বিভীষিকার নাম স্প্যানিশ ফ্লু। ১৯১৮ থেকে ১৯১৯ সালের মধ্যে এ ভাইরাসের সংক্রমণে প্রাণ হারায় পাঁচ থেকে দশ কোটি মানুষ, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় তিন শতাংশ। পৃথিবীতে জানা-অজানা বহু ভাইরাস আছে। এর মধ্যে ছয়টি ভাইরাসকে সবচেয়ে বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। সে ছয়টি ভাইরাসের সঙ্গে ইদানীং যোগ হয়েছে করোনাভাইরাস।

এ পর্যন্ত ঘাতক ভাইরাসের শীর্ষে আছে ইবোলা ভাইরাস। এখন পর্যন্ত এর ছয়টি প্রকরণ শনাক্ত করা গেছে। প্রকরণভেদে ইবোলা ভাইরাস সংক্রমণে মৃতু্যর হার ২৫ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশের বেশি হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রম্নত চিকিৎসার আওতায় আনতে পারলে তাকে বাঁচানো সম্ভব। এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব প্রথম দেখা যায় ১৯৭৬ সালে। একই সঙ্গে নাইজার, সুদান, ইয়াম্বুকু ও রিপাবলিকান কঙ্গোতে। ২০১৪ থেকে ২০১৫ সালে ইবোলা মহামারিতে আফ্রিকার পশ্চিমাংশের দেশগুলোতে ১১ হাজার ৩৩৩ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছিল। ২০১৯ সালে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ইবোলা ভাইরাসে ২ হাজার ৯০৯ জন আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায় এবং এদের মধ্যে ১ হাজার ৯৫৩ জন প্রাণ হারায়। আজ পর্যন্ত এ ভাইরাসের কোনো কার্যকর প্রতিষেধক তৈরি করা যায়নি। ইবোলা ভাইরাস সংক্রমিত মানুষের রক্ত, লালা বা যে কোনো নিঃসৃত রস থেকে কিংবা শরীরের ক্ষতস্থানের মাধ্যমে অপরের শরীরে সংক্রামিত হয়ে থাকে।

রেবিজ ভাইরাস নিউরোট্রপিক অর্থাৎ এটি প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে ছড়ায়। এ ভাইরাসের সংক্রমণে যে রোগটি হয়, তার নাম জলাতঙ্ক। প্যারিসের পাস্তুর ইনস্টিটিউটের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রতিবছর পুরো পৃথিবীতে জলাতঙ্কের আক্রমণে প্রাণ হারায় ৫৯ হাজার মানুষ। সংক্রামিত প্রাণীর লালায় রেবিজ বা জলাতঙ্ক রোগের ভাইরাস বিচরণ করে। সেসব প্রাণী মানুষকে কামড়ালে মানুষ সংক্রামিত হয়। কার্যকর ভ্যাকসিন থাকা সত্ত্বেও আক্রান্ত ব্যক্তিকে সময়মতো ভ্যাকসিন না দেওয়ার কারণে জলাতঙ্কের আতঙ্ক থেকে এখনো মুক্ত হওয়া যাচ্ছে না।

ভাইরাসটি সরাসরি মানুষের স্নায়ুতন্ত্রে আক্রমণ করে এবং এর স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত করে। সময়মতো টিকা না দিতে পারলে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃতু্য অবধারিত। মস্তিষ্কে রেবিজ ভাইরাস যখন ছড়িয়ে পড়ে, তখনই রেবিজের লক্ষণগুলো দেখা দিতে থাকে। লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার তিন থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে তীব্র খিঁচুনি ও পক্ষাঘাতে রোগীর মৃতু্য হয়।

এ ছাড়া রয়েছে এইচআইভি বা এইডস ভাইরাস। এই ভাইরাসটি পোষক কোষে আট থেকে দশ বছর পর্যন্ত ঘাপটি মেরে থাকতে পারে। সক্রিয় হয়ে উঠলে পোষক দেহের প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বিকল করে দিয়ে তাকে মৃতু্যর মুখে ঠেলে দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুসারে, এইডস মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে সাত কোটি মানুষ এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে এবং প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ মানুষ এইচআইভিতে মারা গেছে।

অ্যানথ্রাক্স ব্যাকটেরিয়াঘটিত মারাত্মক সংক্রামক ব্যাধি। গ্রিক শব্দ অ্যানথ্রাক্সের অর্থ কয়লা। এ রোগের কারণে শরীরে কালো রঙের ক্ষত সৃষ্টি হয় বলেই এর এই নামকরণ। বাংলায় একে তড়কা রোগ বলা হয়। এতে গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি গৃহপালিত প্রাণী আক্রান্ত হতে পারে। এটি ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণুবাহিত রোগ। এ জীবাণুর মূল উৎস মাটি। দীর্ঘদিন (অন্তত তিন-চার দশক) রড আকৃতির এই জীবাণু স্পোর মাটিতে টিকে থাকতে পারে। গবাদিপশু বা কোনো তৃণভোজী প্রাণী মাটি থেকে ঘাস খাওয়ার সময় সহজেই এ রোগের জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। এ রোগের জীবাণু সংক্রমিত পানি পান করলেও গবাদিপশু অ্যানথ্রাক্স দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। প্রাণী থেকে এ রোগ মানুষেও ছড়ায়। এটি জেনেটিক রোগ। তবে মানুষ থেকে মানুষে এ রোগের বিস্তার ঘটে না। ২০০৭ ও ২০০৮ সালে দেশে যে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার ভয়ানক প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল তাতে মোট ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। ২০১০ সালে দেখা দেয় গবাদিপশুর অ্যানথ্রাক্স রোগ। দ্রম্নত এ রোগটি ছড়িয়ে পড়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। তাতে এ উপ-খাত থেকে অর্জিত জিডিপির প্রায় তিন-চতুর্থাংশ আয় ঝুঁঁকির সম্মুখীন হয়।

নিপাহ ভাইরাস বাদুড় থেকে পশুপাখি ও মানুষের মধ্যেও সংক্রমিত হতে পারে। জ্বর, বমি কিংবা মাথাব্যথা এ রোগের লক্ষণ। মানুষ কিংবা পশুপাখি কারও জন্যই কোনো প্রতিষেধক এখনো বের হয়নি। এ রোগে মৃতু্যর হার ৭০ শতাংশ। ১৯৯৮ সালে মালয়েশিয়ায় শূকরের মধ্যে প্রথম এ রোগ চিহ্নিত হওয়ার পর সেখানকার কৃষি শহর নিপাহর নামে ভাইরাসটির নামকরণ হয়েছে। পশুপাখি থেকে প্রায় ৩০০ মানুষের এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে, যার মধ্যে অন্তত ১০০ জনের মুতু্য হয়েছে। বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয়েছিল ২০০১ সালে। বাংলাদেশে ৩১টি জেলায় এখনো পর্যন্ত বাদুড় থেকে ছড়ানো এ অসুখটি পাওয়া গেছে। এর পর থেকে প্রতি শীতে অর্থাৎ খেজুরের রস খাওয়ার মৌসুমে অসুখটি মাঝেমধ্যেই দেখা গেছে।

ডেঙ্গু গত বছর বেশ আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এর আরেকটি নাম আছে, তা হলো 'ট্রপিক্যাল ফ্লু'। এডিস মশার কামড় দ্বারা সংক্রামিত হয় ডেঙ্গু। অন্যান্য ভাইরাসের চেয়ে কম বিপজ্জনক। ডেঙ্গু ভাইরাস সাম্প্রতিককালে ইউরোপেও হানা দিয়েছে। প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে ১৪১টি দেশে আনুমানিক ৩৯ কোটি ডেঙ্গু সংক্রমণ ঘটে। বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ডেঙ্গু জ্বরে প্রায় পাঁচ লাখ ব্যক্তি মারাত্মক রক্তক্ষরণকারী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং এর মধ্যে প্রাণ হারায় প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ এবং কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে ডেঙ্গু ভাইরাস সংক্রমণ থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব। উলেস্নখ্য, গত বছর আমাদের দেশে এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে এবং ১২০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, যা ছিল অপ্রত্যাশিত। এবারও রাজধানীতে ডেঙ্গু হানা দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে বেশ কজন রোগী শনাক্তও হয়েছে। চিকুনগুনিয়া ভাইরাসটিও আলোড়ন তুলেছিল। এটাও এডিস মশাবাহিত রোগ চিকুনগুনিয়া। এটি হচ্ছে চিকুনগুনিয়া ভাইরাস (সিএইচআইকেভি) দ্বারা সৃষ্ট একটি সংক্রমণ। ২০১৭ সালের এপ্রিল-মে থেকে ঢাকা শহরে চিকুনগুনিয়া ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ভাইরাস শরীরে প্রবেশের দুই থেকে চার দিনের মধ্যে আকস্মিক জ্বর শুরু হয় এবং এর সঙ্গে অস্থিসন্ধিতে ব্যথা থাকে, যা কয়েক সপ্তাহ, মাস বা বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এ রোগে মৃতু্যঝুঁকি প্রতি ১০ হাজারে একজন বা এর চেয়েও কম, তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে এ রোগের জটিলতা তুলনামূলক বেশি হয়।

ইদানীং যে ভাইরাসটি সারা বিশ্বজুড়ে ত্রাস সৃষ্টি করছে, তা হলো করোনাভাইরাসের একটি প্রকরণ নভেল করোনা। কোভিড-১৯ রোগকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণার পর গত শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইউরোপকে সংক্রমণের নতুন কেন্দ্র হিসেবে অভিহিত করে। বর্তমানে চীনে আক্রান্ত ও মৃতু্য কমে এলেও ইউরোপে বাড়ছে। চীনের পর এখন আক্রান্ত ও মৃতু্যর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ইতালিতে। বিশ্বের ১৩৫টি দেশ-অঞ্চলে মোট ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছেন ৬ হাজারের বেশি মানুষ।

\হকরোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় সারা দেশে ২ হাজার ৩১৪ জন হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) রোববার এই তথ্য জানিয়েছে। নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে রোববার আইইডিসিআরের পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, এখন পর্যন্ত দেশের ৮ বিভাগে ২ হাজার ৩১৪ জন হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৪ জন। আর আইসোলেশনে আছেন ১০ জন। দেশে ১০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন শিশুও রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সারা দেশের স্কুল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। ফলে অভিভাবকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সার্কভুক্ত দেশগুলোর সম্মিলিতভাবে কাজ করার জন্য তহবিল গঠন করার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। সেখানে ভারত এক কোটি ডলার দেবে বলে জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রোববার এক ভিডিও কনফারেন্সে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় করণীয় ও গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন সার্কভুক্ত আট দেশের শীর্ষ নেতারা। এসময় মোদি এ কথা বলেন। বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানো এই রোগ মোকাবেলায় সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের ওপর জোর দেন সার্ক দেশগুলোর সরকার প্রধানরা। নিজ নিজ দেশে নেওয়া কাজের অভিজ্ঞতাও বিনিময় করেন তারা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সার্ক দেশগুলোর স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সচিবদের নিয়ে এমন একটি ভিডিও কনফারেন্সের প্রস্তাব দেন, যাতে সবাই অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারেন। জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি প্রতিরোধে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো যেন একসঙ্গে কাজ করতে পারে, সেজন্য একটি ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, 'যেন ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি। নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারি। বাংলাদেশ এমন একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারে, যদি আপনারা একমত হন। একটি ফোরাম গঠন করা যেতে পারে। আমরা আমাদের বিশেষজ্ঞদের শেয়ার করতে প্রস্তুত আছি। লজিস্টিক সাপোর্ট দেবো, যদি প্রয়োজন হয়।' কোভিড-১৯ রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশের নেওয়া পদক্ষেপ অন্য রাষ্ট্রনেতাদের কাছে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ইতিবাচক মনোভাব প্রশংসনীয়।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যাতে দেশে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে না পড়ে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যথেষ্ট আন্তরিক ও তৎপর। তবে তার যারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তারা বলছেন ভিন্ন কথা। সরকার নাকি প্রকৃত তথ্য গোপন করেছে। এটা আসলে রাজনীতির ভাষা। তবে মরণঘাতী ভাইরাস নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। প্রকৃত অর্থে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কত এই তথ্য গোপন করে সরকারের কী লাভ। বরং সরকার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে অত্যন্ত সাহসিকতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে। আক্রান্ত দেশ থেকে যারা আগত তাদের হোম কোয়ারেন্টিনে ১৪ দিন রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কাউকে কাউকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনেও রাখা হয়েছে। যেহেতু এই ভাইরাসের আয়ুষ্কাল ১৪ দিন। মনে রাখতে হবে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া আর কোয়ারেন্টিনে রাখা এক কথা নয়। অনেকেই এটা নিয়ে আতঙ্ক ও গুজব ছড়াচ্ছে, যা অপরাধ। বাংলাদেশের জনগণের আতঙ্কিত হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে এবং সাবধানতা অবলম্বন করলে সচেতন হলে আমরা করোনাভাইরাসমুক্ত থাকতে পারব।

সালাম সালেহ উদদীন: কবি, কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক ও কলাম লেখক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<92983 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1