শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খোলাবাজারে ডলারের রেকর্ড দাম

বাজারে উধাও, মিললেও লাগছে ১১৯ টাকা
ম যাযাদি রিপোর্ট
  ১১ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

খোলাবাজারে ডলারের দাম দেশের ইতিহাসের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে ১১৮ থেকে ১১৯ টাকায় ডলারের দাম উঠানামা করছে। বুধবার দুপুরের দিকে এই উচ্চদরে লেনদেন হয়। চাহিদার বিপরীতে বাজারে ডলার না থাকায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা যায়। এর আগে গত সোমবার খোলাবাজারে ডলারের দর উঠেছিল ১১৫ টাকা ৬০ পয়সা।

খোলাবাজার ব্যবসায়ীরা বলছেন, তীব্র সংকট রয়েছে ডলারের। প্রবাসীদের দেশে আসা কমেছে, বিদেশি পর্যটকরাও কম আসছেন। এ কারণে ডলারের সরবরাহ কম।

জানা গেছে, মতিঝিল এলাকার মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে এখন ডলার নেই। তবে তারা গ্রাহকদের কাছে সময় নিয়ে প্রতি ডলার ১১৯ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি করছেন।

মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকার খোলাবাজারে বুধবার নগদ ডলার কিন?তে গ্রাহককে গুনতে হচ্ছে ১১৮ থেকে ১১৯ টাকা। সোমবার যা ছিল ১১৪ থেকে ১১৫ টাকা। খোলাবাজারে সাধারণ গ্রাহক বিক্রি করলে প্রতি ডলারে পাচ্ছেন ১১৫ টাকা থেকে ১১৬ টাকা।

ডলারের এই সংকট শুধু খোলাবাজারে নয়, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতেও ১০৮ থেকে ১১০ টাকার ওপরে নগদে ডলার বিক্রি হচ্ছে। জানা গেছে, বেশিরভাগ মানি এক্সচেঞ্জেই এখন নগদ ডলারের সংকট। মানুষ বিক্রির চেয়ে কিনছেন বেশি। এদিকে এতদিন যারা রাস্তায় ডলার কেনাবেচা করতেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের ভয়ে তারাও সরাসরি কেনাবেচা করছেন না।

এদিকে, বেশিরভাগ মানি এক্সচেঞ্জেই এখন নগদ ডলার সংকট। বিক্রির চেয়ে কিনছে বেশি। তবে বিক্রি করার লোক নেই। আবার এতদিন যারা রাস্তায় ডলার কেনাবেচা করতেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের ভয়ে তারাও সরাসরি কেনাবেচা করছেন না।

আব্দুর বাশদ নামে মতিঝিলের এক ডলার বিক্রেতা বলেন, 'বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে নগদ ডলার কেনাবেচা করি। যারা বিদেশ যান তাদের খুচরা কিছু ডলার লাগে। ব্যাংকে গেলে বিভিন্ন ঝামেলা হয়। আমাদের কাছ থেকে সহজে ডলার কিনতে পারে।

খুচরা ৫০, ১০০ থেকে ১০০০ ডলার কেনাবেচা করি। যারা বিদেশ থেকে খুচরা ডলার নিয়ে আসেন তারা আমাদের কাছে বিক্রি করেন। আবার অনেকে ডলার নিয়ে যান, সব খরচ হয় না, তারাও ফেরত দেন। প্রতিদিন দুই তিন হাজার ডলার বিক্রি হয়। বাজার ভালো থাকলে এক দেড় হাজার টাকা পাই। এখন বাজারে ডলারের চাহিদা আছে। কিন্তু ডলার নেই। দামেরও ঠিক নেই। আবার ভয় আছে। আগে সরাসরি বিক্রি করলে কোনো সমস্যা হতো না। এখন পুলিশে ধরছে। তাই ব্যবসা করা সমস্যা।

তিনি জানান, আজ সকালের শুরুতে নগদ ডলার বিক্রি করেছি ১১৬ টাকায়। পরে আর ডলার নেই। এখন ১১৬ টাকায় ডলার পাচ্ছি না। শুধু খোলাবাজারে নয়, বা?ণি?জ্যিক ব্যাংকগু?লো?তেও ১০৮ থে?কে ১১০ টাকার উপরে নগদ ডলার বি?ক্রি হচ্ছে।

এদিকে, দে?শে খোলাবাজারে ডলার প্রথমবারের মতো ১০০ টাকার ঘর পেরিয়ে যায় গত ১৭ মে। এরপর আবার কমে আসে। প?রে গত ১৭ জুলাই ফের ১০০ টাকা অতিক্রম করে। গত মা?সের শেষ দিকে নগদ ডলার ১১২ টাকায় উ?ঠে?ছিল।

সবশেষ গত সোমবার (৮ আগস্ট) আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলার কিনতে খরচ করতে হয়েছে ৯৫ টাকা। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক ওইদিন সরকারি আমদানি বিল মেটাতে এই দরে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে। নিয়ম অনুযায়ী এটাই ডলারের আনুষ্ঠানিক দর। এক দিন আগেও এ দাম ছিল ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা। মের শুরুর দিকে এ দর ছিল ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সায়। এ হিসাবে দেড় মাসের ব্যবধানে টাকার মান কমেছে ৮ টাকা ৫৫ পয়সা।

প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ডলার সংরক্ষণ করে দাম বিক্রি ক?রে?ছে- এমন প্রমাণ পাওয়ায় গত সোমবার দেশি-বি?দে?শি ৬টি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভা?গের প্রধানকে অপসারণ কর?তে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো হলো- বেসরকারি খাতের ব্র্যাক ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, সি?টি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক ও সাউথইস্ট ব্যাংক এবং বিদেশি খা?তের স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।

এ?দি?কে ডলারের কারসা?জি রো?ধে খোলাবাজার ও এক্সচেঞ্জ হাউসগু?লো?তে ধারাবা?হিক অ?ভিযান পরিচালনা ক?রছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত সপ্তাহ পর্যন্ত কারসা?জির অপরা?ধে পাঁচ মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপা?শি ৪২টি?কে শোকজ করা হ?য়ে?ছে। এছাড়া লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করায় ৯টি প্র?তিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নি?তে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বলা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে