শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নৌকা ২৭, ধানের শীষ এক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী একটিতে বিজয়ী

স্বদেশ ডেস্ক
  ০২ মার্চ ২০২১, ০০:০০

পঞ্চম ধাপে ২০ জেলার ২৯ পৌরসভায় নির্বাচনে ভোটগণনা শেষে বেসরকারি ফল ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনী ফলে ২৯ পৌরসভা সভার মধ্যে ২৭টিতে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা। বিএনপির প্রার্থী রেজাউল করিম বাদশা বগুড়া পৌরসভায় জয় পেয়েছেন। এছাড়া রংপুরের হারাগাছ পৌরসভায় স্বতন্ত্র (আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী) প্রার্থী এরশাদুল হক বিজয়ী হয়েছেন। রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা একযোগে ভোটগ্রহণ হয়। সব কয়টি পৌরসভায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হয়। আঞ্চলিক অফিস স্টাফ রিপোর্টার প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

রাজশাহী : রাজশাহীর দুর্গাপুর পৌরসভায় আট হাজার ৮২৯ ভোট পেয়ে তৃতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন তোফাজ্জাল হোসেন। তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মেয়রপ্রার্থী জার্জিস হোসেন সোহেল পেয়েছেন ছয় হাজার ২৭৩ ভোট। এ ছাড়া স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী হাসানুজ্জামান সান্টু (মোবাইল ফোন) ও জাতীয় পার্টির হুমায়ুন কবীর (লাঙ্গল) এই নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন।

এদিকে, প্রথমবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে রাজশাহীর চারঘাট পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন একরামুল হক। তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৯৮১ ভোট। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনপির জাকিরুল ইসলাম বিকুল ভোট পেয়েছেন দুই হাজার ৮১২টি ভোট।

সৈয়দপুর (নীলফামারী) : নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের রাফিকা আক্তার জাহান বেবী (নৌকা) ২৫ হাজার ৬১৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) রশিদুল হক সরকার (ধানের শীষ) পেয়েছেন ৯ হাজার ৬৪৭ ভোট। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির সিদ্দিকুল আলম (লাঙ্গল) আট হাজার ৩৩৪, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাফেজ নুরুল হুদা (হাতপাখা) এক হাজার ৫৮৬ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রবিউল আউয়াল (মোবাইল ফোন) পেয়েছেন এক হাজার ৬৭৮ ভোট।

জয়পুরহাট : জয়পুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়রপদে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কার প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক। তিনি ২৪ হাজার ৪৯০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের অধ্যক্ষ সামছুল হক পেয়েছেন চার হাজার ১৬১ ভোট। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হাতপাখা মার্কায় ৪১২, স্বতন্ত্র প্রার্থী হাসিবুল আলম জগ মার্কায় এক হাজার ৫২৫ এবং দেওয়ান বেদারুল ইসলাম নারিকেল গাছ নিয়ে পেয়েছেন ৫৫৮ ভোট। নির্বাচনে ৫২ হাজার ৪৭৩ জন ভোটারের মধ্যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ৩১ হাজার ২০২ জন। যা শতকরা হিসাবে ৫৯.৪৬ শতাংশ।

কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ ও মহেশপুর পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। কালীগঞ্জে নৌকা প্রতীকে আশরাফুল আলম আশরাফ পেয়েছেন ১৯ হাজার ৩২৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে মাহবুবার রহমান পেয়েছেন তিন হাজার ৭৪ ভোট। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখার নুরুল ইসলাম এক হাজার ৪৭১ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী নারিকেল গাছ প্রতীকের এনামুল হক ইমান পেয়েছেন দুই হাজার ৮১৬ ভোট। এই পৌরসভার মোট ভোটার ৪০ হাজার ৫৭৭ জন।

অন্যদিকে মহেশপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আব্দুর রশিদ খাঁন ১৩ হাজার ৫৯৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিনএপির আমিরুল ইসলাম খাঁন চুন্নু ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন এক হাজার ৫৫ ভোট। যদিও তিনি কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেওয়া ও প্রশাসনের সহযোগিতায় জোর করে ভোট নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুপুরে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। এ ছাড়া নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাংবাদিক গোলাম মোস্তফা কিরণ পেয়েছেন ৯২২ ভোট। এই পৌরসভায় মোট ভোটার ২৪ হাজার ৪৫৩ জন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা নির্বাচনে মেয়রপদে আওয়ামী লীগ মনোনীত বর্তমান মেয়র মিসেস নায়ার কবির নৌকা প্রতীকে ২৮ হাজার ৫৫৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হক ভূইয়া মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৮ হাজার ৩৬১ ভোট।

মেয়রপদে অন্য প্রার্থীদের মধ্যে বিএনপির জহিরুল হক খোকন (ধানের শীষ) আট হাজার ৯৬, ওয়ার্কার্স পার্টির মো. নজরুল ইসলাম (হাতুড়ি) ৩৮৫, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আবদুল মালেক (হাতপাখা) ৯৪০ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুল কারীম (নারিকেল গাছ) পেয়েছেন এক হাজার ৪৪৮ ভোট। নির্বাচনে পৌরসভার মোট এক লাখ ২০ হাজার ৫০৪ জন ভোটারের মধ্যে ৫৭ হাজার ৭৮৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। ভোটগ্রহণ শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন অফিসার জিলস্নুর রহমান বেসরকারিভাবে এই ফলাফল ঘোষণা করেন।

এছাড়া পৌরসভার ১২টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে ১১টি ওয়ার্ডে ও চারটি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর ওমর ফারুক জীবন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। নির্বাচনে সাধারণ ওয়ার্ডে নির্বাচিত কাউন্সিলরা হলেন, ১নং ওয়ার্ডে মো. জামাল হোসেন (পানির বোতল) ২৫৮২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ২নং ওয়ার্ডে শেখ মো. মাহফুজ মিয়া (পানির বোতল) ১৭০৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ৩নং ওয়ার্ডে মো. আক্তার হোসেন চৌধুরী (ডালিম) ২৭০৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ৪নং ওয়ার্ডে মো. মিজানুর রহমান (উটপাখী) ১৪৮০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ৫নং ওয়ার্ডে মো. আবদুল মালেক (পানির বোতল) ১৭৮৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ৬নং ওয়ার্ডে বর্তমান কাউন্সিলর ওমর ফারুক জীবন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। ৭নং ওয়ার্ডে মো. ফারুক আহমেদ (পাঞ্জাবি) ১৮০৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ৮নং ওয়ার্ডে মীর মোহাম্মদ শাহীন (বস্ন্যাক বোর্ড) ১২৫৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ৯নং ওয়ার্ডে মো. ফারুক মিয়া (পানির বোতল) ২৪১৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ১০নং ওয়ার্ডে মো. কাউছার মিয়া (ফাইল কেবিনেট) ৩৬২৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ১১নং ওয়ার্ডে মো. সাকিল (ফাইল কেবিনেট) ২৩৯২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ১২নং ওয়ার্ডে মো. আনোয়ারুল ইসলাম (বস্ন্যাক বোর্ড) ৩৬৫৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

১নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে হোসনে আরা বেগম (চশমা) ৬১৫৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ২নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে শাহানা বেগম (আনারস) ৩৯৩৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ৩নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে মিনারা বেগম (অটোরিকশা) ৪২৮৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ৪নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে নিলুফা ইয়াছমিন (জবা ফুল) ৮৪৮৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) : কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌরসভার নির্বাচনে ৩৫টি কেন্দ্রের সবকটিতে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ইফতেখার হোসেন বেনু নৌকা প্রতীকে ৩৭ হাজার ৮৪৯ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে হাজি শাহিন পেয়েছেন ৯ হাজার ৬৮৯ ভোট। অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুলস্নাহ আল মামুন মোবাইল প্রতীকে পেয়েছেন চার হাজার ৮৯২ ভোট। সকাল থেকেই প্রতিটি কেন্দ্রে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটারদের ভোট দিতে দেখা যায়। ১২টি ওয়ার্ডে শতকরা ৬৬.২৬ শতাংশ হারে ভোট দিয়েছেন ৫২ হাজার ৮০৪ জন।

মাদারীপুর : মাদারীপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী খালিদ হোসেন ইয়াদ তৃতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি নৌকা প্রতীকে ২২ হাজার ৫৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী মো. জাহান্দার আলী মিয়া ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন পাঁচ হাজার ২৫৬ ভোট।

মাদারীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান রাত পৌনে ৮টার দিকে মাদারীপুর সরকারি কলেজ মিলনায়তনে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণা করেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী খালিদ হোসেন ইয়াদকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।

উলেস্নখ্য, শিবচর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী আওলাদ হোসেন খান বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

ভোলা : ভোলা পৌরসভায় তৃতীয়বারের মতো নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন মো. মনিরুজ্জামান ও চরফ্যাশন পৌরসভায় নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন মো. মোরশেদ।

নির্বাচনে ভোলা পৌরসভার আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী মো. মনিরুজ্জামান নৌকা প্রতীক নিয়ে ১৬ হাজার ৯৯ ভোট পেয়ে তৃতীয়বারের মতো বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী মো. হারুনুর রশিদ ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন দুই হাজার ৩৪ ভোট ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী মাওলানা আতাউর রহমান মোমতাজী হাতপাখা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন এক হাজার ১০৮। এ পৌরসভায় কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন মো. মনজুর আলম (১ নং ওয়ার্ড), মো. মিজানুর রহমান (২নং ওয়ার্ড), মো. ছালাহ উদ্দিন লিংকন (৩নং ওয়ার্ড), আসাদ হোসেন জুম্মান (৪নং ওয়ার্ড), এফরানুর রহমান মিথুন মোলস্না (৫নং ওয়ার্ড), মো. ওমর ফারুক (৬নং ওয়ার্ড), মো. শাহ আলম (৭নং ওয়ার্ড), মো. নাছির উদ্দিন হেলাল (৮নং ওয়ার্ড), মো. মাইনুল ইসলাম শামিম (৯নং ওয়ার্ড) ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন জোছনা ইয়াছমিন (১,২,৩), সামছুন নাহার (৪,৫,৬), রাজিয়া সুলতানা (৭,৮,৯)।

ভোলা সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মিজনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ভোলা পৌরসভা ভোট পড়েছে ৫২.২৭ শতাংশ।

এদিকে চরফ্যাশন পৌরসভার আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী মো. মোরশেদ নৌকা প্রতীক নিয়ে ১৪ হাজার ৯১৮ ভোট পেয়ে প্রথমবারের মতো বেসরকারিভাবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী মীর মো. শরীফ হোসেন নারকেল গাছ প্রতীক নিয়ে ৭৮১ ভোট ও বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী মো. হুমায়ুন কবির সিকদার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ৭৪৭ ভোট পেয়েছেন। এ পৌরসভায় কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন স্বপন চৌধুরী (১নং ওয়ার্ড), মো. মফিজ (২নং ওয়ার্ড), মো. মতিন মোলস্না (৩নং ওয়ার্ড), আকতারুল আলম শামু (৪নং ওয়ার্ড), মো. গিয়াস উদ্দিন (৫নং ওয়ার্ড), কাজী মনির হোসেন (৬নং ওয়ার্ড), মোস্তাহিদুল হক তানভীর (৭নং ওয়ার্ড), মোক্তাদির মোলস্না (৮নং ওয়ার্ড), মিজানুর রহমান মনজু (৯নং ওয়ার্ড) ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন ফরিদা পারভীন (১,২,৩), রেজওয়ানা পারভীন (৪,৫,৬), জাহানারা বেগম (৭,৮,৯)। চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাচন অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এ পৌরসভায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭৪ শতাংশ।

চাঁদপুর : চাঁদপুরের মতলব ও শাহরাস্তি পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আওলাদ হোসেন লিটন ও হাজী আব্দুল লতিফ নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে মতলব পৌরসভায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী আওলাদ হোসেন নৌকা প্রতীকে ২০ হাজার ৬৯৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী এনামুল হক বাদল ৬ দিন আগে নির্বাচন বর্জন করেও পেয়েছেন ৯৭৯ ভোট। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাতপাখা প্রতীক নিয়ে মো. সফিকুল ইসলাম পেয়েছেন ৭৫৭ ভোট এবং জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে ডিএম আলাউদ্দিন পেয়েছেন ১৯৭ ভোট।

মতলবে কাউন্সিলর পদে ৬২ জন প্রার্থী ভোটে অংশ নেন। পৌরসভায় মোট ভোটার ৪৮ হাজার ৩৬১।

এদিকে শাহরাস্তি পৌর নির্বাচনে হাজী আ. লতিফ ১২ হাজার ৮৫৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক পৌর মেয়র মো. মোস্তফা কামাল পেয়েছেন ৩ হাজার ৯৭৯ ভোট এবং বিএনপির প্রার্থী মো. ফারুক হোসেন মিয়াজী ধানের শীষ প্রতীকে পেয়েছেন ২ হাজার ৯৮০ ভোট। শাহরাস্তি পৌর নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে ৬৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ পৌরসভায় মোট ভোটার ৩০ হাজার ৮৮৪।

জেলা নির্বাচন কমিশনার মো. তোফায়েল আহমদ বলেন, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করার জন্য ৭ পস্নাটুনর্ যাবসহ বিজেপি, অতিরিক্ত পুলিশসহ স্ট্রাইকিং ফোর্স আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। পৌর নির্বাচনী এলাকায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিকেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করেন।

জামালপুর : জামালপুরের তিনটি পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী দলীয় মেয়র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। জামালপুর পৌরসভায় ছানুয়ার হোসেন ছানু, ইসলামপুরে আব্দুল কাদের সেখ ও মাদারগঞ্জে মির্জা গোলাম কিবরিয়া কবির বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এদিকে ভোট কারচুপির অভিযোগে নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি প্রার্থী।

রোববার সকাল ৮টা থেকে জামালপুর পৌরসভা, মাদারগঞ্জ পৌরসভা ও ইসলামপুর পৌরসভায় ইভিএমএ ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সন্ধ্যায় শহরের মির্জা আজম মিলনায়তন থেকে পৌর নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা। জামালপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী মো. ছানুয়ার হোসেন নৌকা প্রতীক নিয়ে ৪৫ হাজার ৫৯৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির অ্যাডভোকেট শাহ্‌ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২ হাজার ১৫৬ ভোট এবং ইসলামী আন্দোলনের মুফতি মোস্তফা কামাল হাতপাখা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৬০১ ভোট।

এ ছাড়া ইসলামপুর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আব্দুল কাদের সেখ নৌকা প্রতীক নিয়ে ১৪ হাজার ১৯১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির রেজাউল করিম ঢালী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৫১ ভোট, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এস এম জাহাঙ্গীর আলম জগ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ২ হাজার ৭৪ ভোট এবং ইসলামী আন্দোলনের আনিছুর রহমান হাতপাখা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৪৩৭ ভোট। মাদারগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী মির্জা গোলাম কিবরিয়া কবির নৌকা প্রতীক নিয়ে ১১ হাজার ৯৬৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির আব্দুল গফুর ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৪ হাজার ৫ ভোট এবং জাতীয় পার্টির জাহিদ হাসান লাঙল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৩৭৭ ভোট। ইসলামপুরের রিটার্নিং কর্মকর্তা এস এম মাজহারুল ইসলাম ও মাদারগঞ্জের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল মনসুর নির্বাচনের ফল নিশ্চিত করেছেন।

যশোর : যশোরের কেশবপুর পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রফিকুল ইসলাম মোড়ল মেয়র পদে আবার নির্বাচিত হয়েছেন। রোববার উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ শেষে রাতে বেসরকারিভাবে এ ফল ঘোষণা করা হয়।

রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম এম আরাফাত হোসেন বেসরকারিভাবে ফল ঘোষণা করেন।

নির্বাচন কমিশনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পাওয়া বেসরকারি ফল অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের প্রার্থী নৌকা প্রতীকের প্রার্থী রফিকুল ইসলাম মোড়ল পেয়েছেন ১১ হাজার আটশ ৮৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী আব্দুস সামাদ বিশ্বাস পেয়েছেন দু'হাজার তিনশ' ১৩ ভোট। অপর প্রার্থী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল কাদের পেয়েছেন চারশ দশ ভোট। এ ছাড়া কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন এক নম্বর ওয়ার্ডে আতিয়ার রহমান, ২ নম্বর ওয়ার্ডে মশিয়ার রহমান, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে কবির হোসেন, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে আফজাল হোসেন বাবু, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিশ্বাস শহীদুজ্জামান শহীদ, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে মনোয়ার হোসেন মিন্টু, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে কামাল খান, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে আব্দুল হালিম এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে শেখ এবাদত সিদ্দিক বিপুল। সংরক্ষিত মহিলা আসনের ১ নম্বর ওয়ার্ডে খাদিজা খাতুন, ২ নম্বর ওয়ার্ডে আছিয়া খাতুন ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে আসমা খলিল নির্বাচিত হয়েছেন।

সিঙ্গাইর (মানিকগঞ্জ) : নৌকা প্রতীক নিয়ে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আবু নাঈম মো বাশার। তিনি ১৪ হাজার ৩২২ ভোট পেয়ে প্রথমবারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির বর্তমান মেয়র অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম ভূইয়া জয় ১ হাজার ৭১৯ ভোট পেয়ে পরাজিত হন।

উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার (২৮ ফেব্রম্নয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১১টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ হয়। এদিন সন্ধায় ভোটগণনা শেষে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আবু নাঈম মো বাশারকে বিজয়ী ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার শেখ হাবিবুর রহমান। বাশার তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির বর্তমান মেয়র অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম ভূইয়া জয়ের থেকে ১২ হাজার ৬০৩ ভোট বেশি পান। অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম ভূইয়া জয় পেয়েছেন ১ হাজার ৭১৯ ভোট।

সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর হিসেবে ১, ২ ও ৩ ওয়ার্ডে পারুল আক্তার, ৪, ৫ ও ৬ ওয়ার্ডে তাসরিন নাহার রীতা এবং ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডে আলেয়া বেগম বিজয়ী হন।

এ ছাড়া ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে বিজয়ী কাউন্সিলররা হলেন- ১নং ওয়ার্ডে আতাউর রহমান, ২নং ওয়ার্ডে গিয়াস উদ্দীন, ৩নং ওয়ার্ডে সমেজ উদ্দিন, ৪নং ওয়ার্ডে রিয়াজুল ইসলাম শেখ, ৫নং ওয়ার্ডে রেজাউল করিম টিপু, ৬নং ওয়ার্ডে সোহেল রানা, ৭নং ওয়ার্ডে মাহফুজ সরকার, ৮নং ওয়ার্ডে কামাল হোসেন ও ৯নং ওয়ার্ডে সামসুল ইসলাম।

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) :গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এস এম রবীন হোসেন নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রথমবারের মতো মেয়র হিসেবে জয়লাভ করেছেন।

বেসরকারি ফলাফলে নৌকা প্রতীক নিয়ে রবিন হোসেন পেয়েছেন ১৩ হাজার ৭৮৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সতন্ত্র নারিকেল গাছ প্রতীকের প্রার্থী মো. লুৎফুর রহমান পেয়েছেন ১০ হাজার ২২৫টি ভোট।

এছাড়া বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ফরিদ আহমেদ পেয়েছেন ১ হাজার ২৯৭ ভোট এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মো. চাঁন মিয়া পেয়েছেন ৫২৪ ভোট। ৩ হাজার ৫৫৯ ভোটের ব্যবধানে রবীন হোসেন মেয়র নির্বাচিত হন।

রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলা শহীদ ময়েজ উদ্দিন অডিটোরিয়ামে ফলাফল সংগ্রহ ও পরিবেশন কেন্দ্র থেকে কালীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা কাজী মো. ইস্তাফিজুল হক আকন্দ এ ফলাফল ঘোষণা করেন। এ সময় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফারিজা নূর, কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ এ কে এম মিজানুল ঘশ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, ৯টি সাধারণ ওয়ার্ডে বেসরকারিভাবে বিজয়ী কাউন্সিলররা হলেন ১ নম্বর ওয়ার্ডে মোফাজ্জল হোসেন আকন্দ (উটপাখি), ২ নম্বর ওয়ার্ডে মু. আফসার হোসেন (উটপাখি), ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মো. আশরাফউজ্জামান (পাঞ্জাবী), ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মোহাম্মদ বাদল মিয়া (পানির বোতল), ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আশরাফুল আলম (পানির বোতল), ৬ নম্বর ওয়ার্ডে আবদুস সালাম (উটপাখি), ৭ নম্বর ওয়ার্ডে মো. নূরে আলম শেখ (উটপাখি), ৮ নম্বর ওয়ার্ডে মো. আমির হোসেন (উটপাখি) ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন (উটপাখি)। এছাড়া সংরক্ষিত নারী কাউন্সিল হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন ১, ২, ৩ ওয়ার্ডে আমিরুন নেছা (জবা ফুল); ৪, ৫, ৬ ওয়ার্ডে নার্গিস বেগম (আনারস); ৭, ৮, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কাস্তা (আনারস)।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও স্বতস্ত্রসহ ৪ জন মেয়রপ্রার্থী এবং ৩৩ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ১০ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১৭টি কেন্দ্র ও ১২০টি কক্ষে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটাররা ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। মোট ভোটার সংখ্যা ৩৬ হাজার ৬৪০ জন। এর মধ্যে ১৮ হাজার ৩২১ জন পুরুষ ও ১৮ হাজার ৩১৯ জন মহিলা ভোটার। মোট ভোট প্রয়োগ হয় ২৫ হাজার ৮৯০টি। এর মধ্যে ৬০টি ভোট নষ্ট হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে