বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

ছিনতাইকারী চক্র

রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ২৬ মার্চ ২০১৯, ০০:০০
ছিনতাইকারী চক্র

যদি একের পর এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে থাকে তবে স্বাভাবিকভাবেই তা উদ্বেগজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ছিনতাইকারী চক্র, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি এরা কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে এবং কত রকম কৌশলে মানুষকে জিম্মি করে সর্বস্বান্ত করতে পারে- যা বিভিন্ন সময়েই পত্রপত্রিকায় উঠে এসেছে। এবার জানা গেল, বাসে রুমাল কিনে ব্যবহার করে অজ্ঞান হওয়া বেশ কয়েকজন যাত্রী সম্প্রতি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর এসব ঘটনার ছায়া তদন্ত করতে গিয়ের্ যাব জানতে পারে রুমাল কিনে ব্যবহার করলেই অজ্ঞান হওয়ার নেপথ্যের তথ্য। জানা যায়, সুকৌশলে বিক্রেতা সেজে যাত্রীদের কাছে চেতনানাশক ওষুধ স্প্রে করা রুমাল বিক্রি করে অজ্ঞান করে সর্বস্ব লুট করে আসছিল একটি চক্র। আর বাধার মুখে পড়লেই অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করত ক্ষুর-বেস্নড। উলেস্নখ্য যে, গত শনিবার রাতে গাজীপুর জেলার টঙ্গী এলাকা থেকে এই অভিনব সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের ৭ সদস্যকে আটকের পর এমন অভিনব কায়দায় যাত্রীদের মালামাল সর্বস্ব লুট ও ছিনতাইয়ের তথ্য জানিয়েছের্ যাব।

আমরা মনে করি, এই বিষয়গুলোকে এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। মনে রাখতে হবে ছিনতাইকারী বা অসাধু চক্ররা নানারকমভাবে মানুষকে জিম্মি করে স্বার্থ আদায়ে মরিয়া হয়ে ওঠে- এসব চক্রগুলোর অপতৎপরতা রুখতে প্রয়োজনে কঠোর হতে হবে। উলেস্নখ্য, রাজধানীর ঢাকা-ময়মনসিংহ, আব্দুলস্নাহপুর-আশুলিয়া, টঙ্গী-কালীগঞ্জ রুটে এবং গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে বাসে যাত্রীদের কাছে এই চেতনানাশক স্প্রে ব্যবহৃত রুমাল বিক্রির অপতৎপরতা বেশি বলেও জানা যায়। এ ছাড়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে রাব-১ এর সিও বলেছেন, আটকরা পরস্পর যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা-ময়মনসিংহ, আব্দুলস্নাহপুর-আশুলিয়া, টঙ্গী-কালীগঞ্জ রুটে এবং গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে বাসে যাতায়াতকারী যাত্রীদের কাছে চেতনানাশক ওষুধমিশ্রিত রুমাল বিক্রি ও অজ্ঞান করে সবর্স্ব লুট করে আসছিল।

আমরা মনে করি, আটককৃতদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং প্রয়োজনে অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। যেন এই ধরনের চক্রগুলো অপতৎপরতা চালাতে না পারে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যখন মানুষ জীবন জীবিকার প্রয়োজনে বাস বা বিভিন্ন ধরনের যানবাহনে যাতায়াত করে, তখন যদি এসব চক্রের ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যায়, তবে তা অত্যন্ত ভয়ানক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এবারের ছিনতাইকারী এই চক্রটির কর্মকান্ড সম্পর্কে এমন বিষয় সামনে এসেছে যে, চক্রের এক সদস্য প্রথমে টার্গেটকৃত ব্যক্তির পাশের সিটে বসেন। এরপর আরেকজন বিক্রেতা সেজে একই বাসে রুমাল নিয়ে টার্গেটেড যাত্রীর কাছে যান। কৌশলে আগে থেকে চেতনানাশক স্প্রে মেশানো রুমাল বের করে বসে থাকা যাত্রীর নাকের কাছে ধরেন। যাত্রীর পাশে বসা ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য রুমালের দরদাম করতে করতে ওই যাত্রীর নাকের কাছে ধরে রাখেন। ২-১০ মিনিটের মধ্যে টার্গেটকৃত যাত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়েন! সিটে বসে থাকা চক্রের সদস্য তখন তাকে এমনভাবে বসিয়ে রাখেন যাতে সবাই মনে করে অজ্ঞান নয় ঘুমিয়ে পড়েছেন ওই যাত্রী। এরপর নিরাপদ দূরত্বে রুমাল বিক্রেতা বাস থেকে নেমে যান এবং চক্রের অপর সদস্যও সর্বস্ব লুট করে নেমে যান!

আমরা বলতে চাই, এসব চক্রের দৌরাত্ম্য রোধের বিকল্প নেই। নজরদারি বাড়ানো থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে এবং জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া জনসচেতনতা বৃদ্ধিও অত্যন্ত জরুরি। সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে এই ধরনের চক্রগুলোকে রুখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<42582 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1